চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীর শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে নিউরো সার্জারি বিভাগে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও নেই জরুরি চিকিৎসা সেবা। যে কারনে এ বিভাগে মোট অপারেশনের ১০ ভাগেরও কম হয়েছে অতি গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্কের অপারেশন। এখানে দুইজন বিশেষজ্ঞ সার্জন থাকলেও সপ্তাহে মাত্র একদিন সার্জারি করায় রয়েছে অপারেশনের অপেক্ষায় থাকা রোগীদের দীর্ঘ লাইন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে মস্তিষ্কের ব্রেন টিউমার অপারেশন শুরু হয়। এর আগে শুধু ছোট-খাটো অপারেশন হতো। গত এক বছরে এখানে ৩০টি ব্রেনের অপারেশন হয়েছে অথচ মুমূর্ষু রোগীদের অপারেশনের নেই কোন ব্যবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনায় বা অন্য কোন কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে খুলনার অন্য কোথাও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র রয়েছে আবু নাসের হাসপাতালে। আর দুই জন নিউরো সার্জনই এখানে চাকুরি করেন। অথচ সেখানে জরুরি অপারেশন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে কারনে একই চিকিৎসকের কাছে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে লক্ষ টাকা খরচ করে অপারেশন করাতে হয় রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত মস্তিষ্ক অপারেশনের জন্য অপেক্ষায় আছে ১০ জনের বেশি আর নিউরো সার্জারির অন্যান্য অপারেশনের জন্য ৫ শতাধিক রোগী অপেক্ষায় আছে। হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহের সোমবার অপারেশন করা হয়। তবে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, এখানে সার্জারির চিকিৎসক ও অপারেশন থিয়েটার সংকট রয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ইব্রাহিম খলিল বলেন, বর্তমানে এখানে সরকারিভাবে বিনা খরচে ব্রেন সার্জারি অপারেশনের মেশিন (ঈৎধসরড় ঃড়সব) সংযোজন করা হচ্ছে। যার সাহায্যে মানব দেহের মস্তিষ্কের সকল প্রকার সার্জারি ব্রেনে রক্তক্ষরণ, ব্রেন ফ্রাকচার, ব্রেন টিউমার, ব্রেন স্ট্রোক, ব্রেন হ্যামারিং, ব্রেন এবসস, ভি-পিসটসহ মস্তিষ্কের জটিল অপারেশন করা সম্ভব। এক সময়ে রোগীদের এ সকল চিকিৎসা নিতে ঢাকা যেতে হতো এবং অনেকটা ব্যয়বহুল ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সকল অপারেশনের জন্য রোগীদের অনেকদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। যে কারনে ইমারজেন্সি রোগীরা প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছে। রোগীদের এ ধরনের একটা অপারেশনে প্রায় লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। নিশাত পারভিন নামের এক রোগীর ছেলে রুবেল বলেন, আমার মায়ের নিউরো সার্জারি শিরা অপারেশনের জন্য কয়েক মাস আগে আবু নাসের হাসপাতালে সিরিয়াল দেই। তবে আমাদের এখনো ডাকা হয়নি, আমরা অপেক্ষায় আছি। এদিকে আমার মায়ের সমস্যা সঙ্কট আরও বাড়ছে, কি করবো বুঝতে পারছি না।
খুলনার শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের উপ-পরিচালক মোর্শেদ আলম বলেন, নিউরোসার্জারি বিভাগের জনবল সঙ্কট নেই। দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে কার্যক্রম চলছে। তবে ওই ডিপার্টমেন্টের অপারেশনগুলো খুবই জটিল, রোগীদের ফিট থাকার বিষয় আছে। ইউরোলজি ডিপার্টমেন্টে প্রতি মাসে দশ থেকে পনেরোটি অপারেশন করা হয় বলে তিনি জানান।