শিশুদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা অপরিহার্য, যেন তারা সমান অধিকার ও সকল ধরনের সুযোগ পান। শিশুরা নিরাপদ থাকলে, তারা পরবর্তিতে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। শিশু নির্যাতন বন্ধে সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করা গেলে জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। তাই এই সমস্যা সমাধানে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, শিশুরা অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং বৈষম্য, সামাজিক কলঙ্ক ও বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হচ্ছে। যাদের দ্বারা শিশুরা সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার কথা, তাদের হাতেই শিশু প্রতিনিয়ত সহিংসতা, ভৎসনা এবং শোষণের শিকার হচ্ছে। প্রতি দশজনের মধ্যে নয়জন শিশুই তাদের বাবা-মা এবং শিক্ষক সহ সেবাদানকারীদের দ্বারা শারীরিক শাস্তি বা মানসিক আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। অনেক শিশুই সময়ের আগেই বড় হয়ে যেতে বাধ্য হয়। নিজেদের পরিবারের বেঁচে থাকার কৌশলের অংশ হিসেবে অনেক কিশোর-কিশোরীকে প্রায়ই কাজে পাঠানো হয় বা তাদের অপরিণত বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় সাত শতাংশ শিশু কোনো না কোনো ধরনের শিশুশ্রমে জড়িত। এছাড়াও খুব অল্পবয়সী শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করা অব্যাহত রয়েছে। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আইন থাকা সত্ত্বেও বাল্যবিবাহের হার কমছে না। ফলে শিশুর হাসি ফিরিয়ে আনতে হলে শিশু বিকাশের জন্য সময় দিতে হবে। তাঁকে সব ধরনের ভয় থেকে দূরে রাখতে হবে। এভাবে বললেন জনউদ্যেগ,খুলনার আলোচনা সভায় বক্তারা।
শনিবার (২২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টায় জনউদ্যোগ,খুলনার উদ্যোগে নগরীর একটি সেমিনার কক্ষে শিশুদের হাসি রক্ষা করুন-নির্যাতন ও সহিংসতার অবসান ঘটান শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ,খুলনার আহবায়ক শিক্ষক মানস রায়। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা সিভিল সোসাইটির আহবায়ক এস এম শাহনেওয়াজ আলী, মানবাধিকার কর্মি এ্যাড: মোমিনুল ইসলাম, মো: হুমায়ূন কবীর, নারী নেত্রী মমতাজ সুলতানা কবিতা, নূরুন নাহার হীরা, রুখসানা পারভীন, কৃষ্ণা দাশ, উম্মে উমামা, নাইয়ার নাহার যুথী, খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক বিধান চন্দ্র রায় প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, লাখ লাখ শিশুর মাথার ওপর ছাদ নেই। তারা রাস্তায় বসবাস করে ও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। শিশুদের আরেকটি অংশ প্রতিবন্ধীত্বের শিকার। তাই সরকারকে এই নতুনদের দিকে নজর দিতে হবে। সিডো সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।