ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৭ মার্চ) বিকাল ৫টার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।
প্রথমে দুই প্রধানমন্ত্রী একান্তে আলোচনায় বসেছেন। দুই শীর্ষ নেতার আলোচনায় সংযুক্তি, ব্যবসার পাশাপাশি পানি ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলোও প্রাধান্য পাচ্ছে। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন তারা।
দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শেষে সইয়ের জন্য পাঁচটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে সরকারের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে ভার্চুয়ালি।
সমঝোতা স্মারকগুলো-
দুর্যোগ দমনে সহযোগিতা
ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশে অশুল্ক বাধা দূরের পদক্ষেপ
দুই দেশের জাতীয় ক্যাডেট কোরের মধ্যে সহযোগিতা
তথ্য যোগাযোগ বিস্তৃতি ও
রাজশাহীতে খেলার মাঠ বিষয়ে দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন।
নরেন্দ্র মোদির সফরে আটটি প্রকল্প উদ্বোধনের পরিকল্পনা। তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু–বাপু ডিজিটাল জাদুঘরের উদ্বোধন শুক্রবার (২৬ মার্চ) হয়ে গেছে।
অন্য সাতটি প্রকল্পগুলো-
চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু
শিলাইদহের সংস্কারকৃত কুঠিবাড়ি
মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া হয়ে কলকাতা পর্যন্ত স্বাধীনতা সড়ক
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি সমাধি
বাংলাদেশের কাছে ভারতের ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর
দুটি সীমান্ত হাট চালু এবং
স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচন।
তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে প্রক্রিয়াগত সমস্যা থাকায় স্বাধীনতা সড়ক এবং চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন উদ্বোধন করা হলেও। সড়কে চলাচল আর ট্রেনে যাত্রীদের যাতায়াত শুরু হতে কিছুদিন সময় লাগবে।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত সন্ধ্যা ৭টার পরিবর্তে রাত ৯টায় দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি।
করোনা মহামারি শুরুর পর মোদি প্রথম বিদেশ সফর করছেন। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির এটা দ্বিতীয় ঢাকা সফর। এর আগে ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন মোদি।
দুই দিনের সফরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান। এরপর দিনের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তিনি।
বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর যে বিশেষ আয়োজন ‘মুজিব চিরন্তন’এ যোগ দেন। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল এক্সিবিশনের’ পর্দা উন্মোচন করেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দির পরিদর্শন করে ঢাকায় ফেরেন মোদী।