নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বই বর্তমানে আমাদের প্রধান হাতিয়ার। আর এ দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা এবং এলাকায় অঘোষিত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
লকডাউনের প্রধান উদ্দেশ্য সামাজিক দূরত্ব তৈরি ও সংক্রমণ প্রতিরোধ। এটা সবাই জানলেও মানছে না অনেকেই। এর ফলে, প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই নিচ্ছে কঠোর পদক্ষেপ। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে অনেক ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে, জনসমাগম স্থানে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসা মাত্রই দৌড় দিচ্ছে জনগণ। আবার কোথাও কোথাও প্রশাসনের লোকেরা দিচ্ছে উত্তম-মাধ্যম।
তবে এরই মাঝে ফায়দা লুটছে অনেকেই। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া টাঙ্গাইল পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিন। যাকে অনেকেই ‘ক্যাডার আমিন’ নামে চেনে। গত ০৭ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সবাই ঘরে অবস্থান করছেন। এরমধ্যে কেউ কেউ জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছে। পৌরসভা এলাকায় মানুষের আনাগোনা তেমন একটা চোখে না পড়লেও শহরের নিরালার মোড়ে নিউ মার্কেটে ওষুধের দোকানে মানুষের ভিড়। রাস্তায় দু-একটি মোটরসাইকেল চললেও রয়েছে চালকের পরিচয়পত্র। বেশিরভাগই ওষুধের বিক্রয় প্রতিনিধি। এসময় লাঠি হাতে ক্যাডার আমিন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অজুহাত দেখিয়ে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষদের। এক আমিন টাঙ্গাইলে থাকলেও এমন অনেক আমিন রয়েছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
গত ১১ এপ্রিল খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এক গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, খুলনা জেলা অধিক্ষেত্রে সকল ধরনের যানবাহন প্রবেশ ও বাহির হওয়া বন্ধ থাকবে। এছাড়া এক এলাকা থেকে অন্য এলাকা, এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা এবং উপজেলা থেকে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চলাচল কঠোর ভাবে সীমিত করা হলো। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না।
এ ঘোষণার ফায়দা লুটছে ক্ষমতাসীন দলের কথিত কিছু রাজনৈতিক কর্মী ও স্থানীয় মাদকসেবীরা। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় লাঠি হাতে মোড়ের উপর দিচ্ছে শোডাউন। কথা নেই বার্তা নেই লাঠি পেটা করছে নির্বিচারে। এক এক মোড়ে পাঁচ-সাতজন মিলে দিচ্ছে আড্ডা। সমাজ সেবার নামে দেখাচ্ছে নিজের দাপট। পাশাপাশি ফাঁকা রাস্তায় মাদক ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে। রাস্তা ফাঁকা থাকায় মাদক সেবীদের সুবিধা হয়েছে বেশ। প্রশাসনের লোক দেখলে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা হয়ে যাচ্ছে সমাজসেবী। যেন শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা।
সাধারণ মানুষের দাবী সমাজসেবী নামক এমন অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি সেচ্ছাসেবী ও সমাজসেবা নামক মহৎ কাজের জন্য এলাকার সৎ ও ভালো মানুষদের সুযোগ দেওয়া হোক।