এসএম রায়হান, কোটচাঁদপুর(ঝিনাইদহ):: মহামারী করোনার থাবায় সারা বিশ্ব আজ ঘরবন্ধি হয়ে পড়েছে। অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। এখনো পর্যন্ত সঠিক কোন প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিস্কার না হওয়ায় সংক্রামক এ ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় মিলছে না। তবে একমাত্র সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখলে ভয়াবহ এই মহামারী থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভয়ানক এই করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদাসীনতা দেখা দিয়েছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার জনসাধারনের মধ্যে।
ফলে করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে এই এলাকার মানুষ। সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকে অবাধে ব্যবসা বাণিজ্য ও চলাফেরা করছেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা থোড়ায় কেয়ার করছেন। ফলে এই এলাকাতে যে কোন মুহুর্তে সংক্রামণ ঘটাতে পারে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব।
প্রশাসনের সচেতনতামূলক কোন কর্মসূচীই যেন পৌঁছাচ্ছে না উপজেলার হাট-বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে। হাট-বাজারের সময় সীমা বেধে দেওয়ায় স্বাভাবিক সময়ের মত হুড়োহুড়ি করে বাজার করছেন অধিকাংশ ক্রেতা। ক্রেতাদের মুখে নিম্মমানের মাস্ক পরা থাকলেও বেশির ভাগ বিক্রেতারা ব্যবহার করছেন না মাস্ক কিংবা হ্যান্ড গ্লাবস। দেখে বুঝার উপাই নেই যে, মহামারী করোনার থাবা পড়েছে এই দেশে।
সারা বিশ্বকে আজ করোনা অচল করে দিলেও বাংলাদেশের অনেকেই তা হাস্যরস মনে করছেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিয়মিত টহল, প্রচারণা চালালেও বেশির ভাগ মানুষ তা অগ্রাহ্য করছেন। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় তার উল্টো চিত্র। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক ব্যবসায়ী লোক চক্ষুর আড়ালে অবাধে ব্যবসা চালিযে যাচ্ছেন। প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে অনেক সময় গুনতে হচ্ছে জরিমানা। তার পরেও থেমে নেই এই লুকোচুরি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জনসাধারণের মধ্যে অসচেতনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাজারের এই দৃশ্য দেখে যে কেউ বলবে উৎসবের আমেজ চলছে এই এলাকাতে। অন্যদিকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষের আগমন ঘটছে নিয়মিত। তারাও মানছেন না হোম কোয়ারেন্টাইন! স্থানীয় সচেতন মহলরা মনে করছেন, বর্তমান পেক্ষাপটে আমাদের এই অসচেতন ও উদাসীনতা করোনা সংক্রামণে হতে পারে বড় কারণ।
কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাজনীন সুলতানা জানান, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পুলিশ, সেনাবাহিনী, গ্রামপুলিশ ও আনসার সদস্যরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে করা হচ্ছে জরিমানা। তিনি বলেন, সবার আগে প্রথমে আমাদের নিজেদেরকে সচেতন হতে হবে। নিজে বাঁচলে বাঁচবে তার পরিবার, রক্ষা পাবে দেশ ও জাতি।