চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃদেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণে আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। এখনো সনাতনী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করায় উৎপাদন থেকে সংরক্ষণ পর্যায়ে মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বিশাল পরিমাণ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা দেশের পেঁয়াজের সরবরাহ ব্যবস্থা ও দরের ভারসাম্যহীনতার জন্য অন্যতম দায়ী। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২৩ লাখ টন। যার ৬ লাখ টন পচে যায় সংরক্ষণের অভাবে। একই কথা বলছেন ব্যবসায়ীরাও। ঘাটতি মেটাতে বছরে দেশে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় ৯ লাখ টনের মতো। যার ৯০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। বাকি ১০ শতাংশ আসে মিয়ানমার, মিশর ও তুরস্ক থেকে। আর দেশে দিনে পেঁয়াজের চাহিদা ৬ হাজার টন। সেই হিসাবে পচে যাওয়া ৬ লাখ টন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা গেলে আমদানি কমবে ৭০ শতাংশ।
চাষি, ব্যবসায়ী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সনাতন পদ্ধতির পেঁয়াজ সংরক্ষণব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণের উপায় খুঁজে বের করা দরকার। পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা গেলে উৎপাদন ও চাহিদার ব্যবধান অনেক কমে আসবে। ফলে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে।
এ দিকে এ বছরের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ সংরক্ষণে সরকার গুদাম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে টিসিবির মাধ্যমে তিন জেলায় ৬টি গুদাম তৈরি করা হবে। এসব গুদামে সরকার কৃষকের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে বা কৃষককে ভাড়া দিয়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে মোট পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ টন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ সংগ্রহকালীন ও সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩০ লাখ টন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ১০ দশমিক ৯১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ থেকে ২৫ লাখ টন। সুতরাং সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গেলে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ থেকেই ৯০ শতাংশ চাহিদা মেটানো সম্ভব।