লক্ষ্মীপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোটি টাকার সম্পত্তি বেদখল করে দোকানঘর নির্মাণ করা হলেও দখলদারদের বিষয়ে কোন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উল্টো উপরের তদবির থাকার দোহাই দিয়ে ‘চুপ’ রয়েছে সংস্থাটি। যদিও সরকারী সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধারের জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দখলদার প্রভাবশালী হওয়ায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ললক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে আনোয়ারা চ্যারিটি হসপিটাল সংলগ্ন স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন। গত কয়েকদিন থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে টানা কাজ করে সেখানে ৭টি দোকানঘর নির্মাণ করেছেন তিনি। এরই মধ্যে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তোফাজ্জল হোসেন প্রভাবশালী হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিভিন্ন পর্যায়ে তার লোক (!) থাকায় কর্তৃপক্ষ অনেকটা অসহায়। ফলে নির্বিগ্নে দখল করে ফেলেছেন কয়েক কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি।
জানতে চাইলে দখলদার তোফাজ্জল হোসেন প্রথমে জমিটি লীজ নিয়ে ঘর তুলেছেন বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে তিনি বলেন, ‘আমি লীজের জন্য আবেদন করেছি, সেটি প্রক্রিয়াধীন। জমিটি আমি লীজ পাবো। ১০ বছরের জন্য লীজ বাবদ অর্ধকোটি টাকার বেশি খরচ হবে।’
লীজের আগে স্থাপনা নির্মাণ করা যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার স্যানেটারি এন্ড টাইলস ব্যবসার প্রয়োজনে আমি দোকানঘর নির্মাণ করেছি। আপনাদের বা কারো যদি কোন সমস্যা হয়- তাহলে ভাঙ্গানোর ব্যবস্থা নেন। এতে আমার কোন আপত্তি নেই।’
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন উপ-প্রকৌশলী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান, সড়কের জমি লীজের জন্য তোফাজ্জল নামে একজন আবেদন করেছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
লীজের আবেদন করে স্থাপনা নির্মাণ করা যায় কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুক্র-শনিবার অফিস বন্ধ থাকার সুযোগে তারা কাজ শুরু করেছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের নিষেধ করেছি। কিন্তু বিভিন্ন পর্যায় থেকে আমাদেরকে তাদের পক্ষে সুপারিশ করা হচ্ছে। তারপরেও আমরা বলে দিয়েছি- যেকোনো সময় স্থাপনা ভেঙে জায়গাটি পরিষ্কার করা হবে। আর এমনিতেই চারলেনের কাজ শুরু হলে সড়কের প্রয়োজনে সব স্থাপনা ভেঙে জমি খালি করা হবে।’