অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল ও তার স্ত্রী ফাহমিদা নিলুফারের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ জুন) দুদক সূত্র জানায়, গত রোববার এই মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
সূত্র আরো জানায়, সওজের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ফিরোজ ইকবাল ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করেন দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ। তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন মামলার অনুমোদন দেয়। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধ মামলা দায়ের করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাহমিদা নিলুফার দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তার নিজের নামে টাঙ্গাইলের করটিয়া মৌজায় পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৫১ শতাংশ জমি এবং ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেন। দুদকের অনুসন্ধানে প্রায় ৬১ লাখ টাকার স্থাবর এবং ৪২ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এসব সম্পদের অর্জনের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
দুদক বলছে, অনুসন্ধানে কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট, ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট ও গাড়ির তথ্য দুদকে দেননি। সব মিলিয়ে তার ৮৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
দুদক বলছে, ফাহমিদা নিলুফার একজন গৃহিণী। তার স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পাওয়া বেতনে তার দুই সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এবং লন্ডন–আমেরিকায় পড়িয়েছেন। তারপরও তার নিজের এবং স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে লাখ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন দেখা গেছে। ফাহমিদা নিলুফারের ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন পেয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। ওসব লেনদেনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তারা দিতে পারেননি।
অনুসন্ধান কর্মকর্তার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্বামী ফিরোজ ইকবালের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ বৈধ করার লক্ষ্য নিয়ে ফাহমিদা নিলুফার স্বামীকে সহায়তা করেন।
ফিরোজ ইকবালের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়, ফিরোজ ইকবাল ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিজ নামে ৬৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এছাড়া অনুসন্ধানে তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পায় দুদক।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) সহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।