চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন করার বিপক্ষে যদি সবাই মত দেন, তাহলে ইভিএমের মাধ্যমে আর ভোটগ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।বুধবার সকালে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনীতে সিইসি এসব কথা বলেন। নূরুল হুদা বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন পরিচালনায় কোনো অসুবিধা দেখিনি। আমরা সুফল পেয়েছি, তাই এ ব্যবস্থা ধরে রেখেছি।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, প্রতিযোগিতামূলক, অংশগ্রহণমূলক হবে। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক প্রার্থীর কার কী ধর্ম, বর্ণ, রং, রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, সেটি নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন তাদের দেখার বিষয় নয়। প্রত্যেকের সঙ্গে সমান আচরণ করতে হবে। প্রত্যেকের কথা ধৈর্য নিয়ে শুনতে হবে। নীতি-নির্ধারণী এলাকা ছাড়া সব দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পিত রয়েছে। সেখানে ছন্দ, গদ্য, পদ্যের দরকার নেই। বাস্তব প্রেক্ষাপটে কী আছে সেটা দেখতে হবে। অনেকে অনেক লালিত-পালিত কথা বলবে। কিন্তু আপনারা মাঠে থাকবেন। যা দেখবেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। সমস্যা হলে ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচনের অনেক পরিপত্র জারি হয়ে গেছে। সেখানে সব নির্দেশনা আছে।
তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে ইভিএমে টিকে আছি। আপনারা (কর্মকর্তারা) অনেকে ইভিএমে নির্বাচন করেছেন। ইভিএম নির্বাচন পরিচালনায় কোনো অসুবিধা দেখিনি। এর মাধ্যমে সফলভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। ইভিএম যারা মাঠে-ময়দানে দেখেন, প্রয়োগ করবেন, তাদের কাছে সন্দেহ থাকলে আমাদের বলবেন। যদি সবাই বলেন, এটা দিয়ে ভালোভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা যায় না, তাহলে করবো না।
সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে আমরা সুফল পেয়েছি। তাই ধরে রেখেছি। ভোটাররা যেন তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। ভোটাররা যেন পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে।
তিনি বলেন, রাজনীতির ভোটের দিকে সবার নজর থাকে। পৃথিবীর নানা রকমের কূটনৈতিক মহলের দৃষ্টি থাকে। তাই নির্বাচন পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনে সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস ও আস্থার সঙ্গে বলতে চাই, আপনারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় দল, মত, আদর্শের প্রতি দুর্বলতা থাকতে পারে না।
নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন চায় ইসি। অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।’
অপর নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ মসৃণ করতে প্রতি কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর দুজন করে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হবে। কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করে কমিশনের ভাবমূর্তি। প্রার্থীরা যেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড পায় সেভাবে কাজ করতে হবে। নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ইসি।’
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম।… আস্থার জায়গাটা দৃঢ় করতে চায় ইসি। এটি সক্ষমতার পরীক্ষা। নির্বাচন যেন প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকে, নির্বাচন নিয়ে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএম নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনাগ্রহের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং, সহকারি রিটার্নিং ও সহায়ক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে এই আয়োজন। দুইদিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ৮২ জন কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।