সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়ানোর কোন পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে তা নেই। যাতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩/২৪ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থাকায় স্নাতকোত্তরের পরেও ৬ থেকে ৭ বছর সময় পেয়ে থাকে চাকরি প্রার্থীরা। এ ছাড়াও ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই এক বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।
ফরহাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি চাকরি হতে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করায় শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। এতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স ৩০ বছরের বেশি তারা চাকরিতে আবেদনের সুযোগ সুযোগ পেলেও অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হতে পারে।
এসব কারণে সরকারের চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এর অধীনে অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর এবং সংবিধিবদ্ধ/স্বায়ত্তশাসিত/জাতীয়কৃত প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনার পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরিতে (বিসিএস ছাড়া) সরাসরি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি সে সকল প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখ নির্ধারণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ১৭০ জন কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিকভাবে কর্মরত আছে বলে জানান ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা এবং জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আছেন।
ভোলা- ২ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কোন পদে সরাসরি নিয়োগের সুপারিশ করে না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের রিকুইজিশনে বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকে। ২৮তম থেকে ৩৯তম বিএসএস পরীক্ষায় ৩৫ হাজার ৬০৩ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রদান করেছে পিএসসি।
একই সময়ে নন-ক্যাডারে প্রথম শ্রেণির পদে ৫ হাজার ১৪৩ জন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির (১০, ১১ ও ১২তম গ্রেডে) পাঁচ হাজার ৭৪৩জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের চাহিদার প্রেক্ষিতে পিএসসি ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৯ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডে চার হাজার ২৮৫জনকে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির (১০, ১১ ও ১২তম গ্রেড) বিভিন্ন নন-ক্যাডার পদে ৩২ হাজার ৭৬৫জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।