সাতক্ষীরার দেবহাটার সরকারি বি.বি.এম.পি. ইনস্টিটিউশনের (পাইলট হাইস্কুল) সহকারী প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী এবং একের পর এক সম্মানহানীর ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকার সাধারণ মানুষ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. শফিকুল ইসলাম ২০০৮ সালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ হতে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। গত ১৫/০৪/২০১২ তারিখে তার উত্তোলিত প্রভিশনাল সনদে প্রস্তুতকারক ও নিরীক্ষকের স্বাক্ষর থাকলেও ভুলবশত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর না থাকায় ২০১৩ সালে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ.ন.ম তরিকুল ইসলাম সনদ পত্রটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচাই না করে ই-সনদপত্র সম্পর্কে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বিধি না জেনে নিয়োগ বিষয়ে মন্তব্য করেন।
পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এ বিষয়ে তদন্তের জন্য গত ১১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তৎকালীন সভাপতি নজরুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল সনদ যাচাইয়ের জন্য গত ২৯ আগষ্ট ২০১৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পত্র দিলে (স্বারক নং- দেমস্কু/দেব/সাত/২০১৩/১-৮) গত ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ সনদ যাচাই পূর্বক শফিকুল ইসলামের উক্ত সনদ পত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত, সঠিক এবং ভূলবশত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর ছাড়া চলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে। সনদটি শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাতিল করে নতুন সনদ ইস্যু হয়েছে মর্মে বিদ্যালয় কতৃপক্ষকে পত্র প্রেরণ করেন। স্মারক নং- এইউবি/পরীক্ষা/২০১৩ (৩ ডিসেম্বর) তারিখ সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার গত ১৬ জানুয়ারী ২০১৪ তারিখে প্রধান শিক্ষককে পত্র দিয়ে (স্মারক নং- জেশিঅসাত/১৫৮৮ তারিখ- ১৬ জানুয়ারী ২০১৪ইং) গত ২১ জানুয়ারী ২০১৪ তারিখে সরজমিনে উপস্থিত হয়ে আবেদনকারীদের সম্মুখে তদন্তকার্য সম্পন্ন করেন। প্রধান শিক্ষক কতৃক উপস্থাপিত কাগজপত্র ও সনদ পত্র যাচাই পর্যালোচনা করে সনদপত্রকে যথাযথ ও সঠিক এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক বলে এক প্রতিবেদনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেন। যার স্মারক নং- জেশিঅসাত/১৬৭২ (০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ইংরেজি) তারিখে তদন্তকালে প্রধান শিক্ষকের উপস্থাপিত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখের একটি ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনে শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মনগড়া, উদ্দেশ্য প্রনোনিত, বানোয়াট, সম্মানহানির অপচেষ্টা ও অসৎ ব্যক্তিদ্বারা প্রভাবিত মর্মে সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করা হয়। তৎকালীন সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় সহকারী প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে তদন্তকালে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দোষারোপ করা হয়। এরপর গত ১৫ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে ইস্যুকৃত এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাতিলকৃত সনদ পত্রটিকে পুনঃরায় যাচাইয়ের জন্য মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার বরাবর পত্র (স্মারক নং- ৪জি-২০২৬-ম/২০১০/সাত/দেব/বিবি/
এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম জানান, বিগত দিনে প্রাক্তন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমাকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্ত চলছে। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমান সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে মিথ্যা মামলার ভয়ে ভীত না হয়ে বিদ্যালয়ের উন্নতিকল্পে প্রতিবাদ করে যাবেন বলে জানান। ইতোমধ্যে প্রাক্তন সভাপতি নজরুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পালের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখ বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন শেষে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন অভিভাবক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এতে প্রাক্তন সভাপতি নজরুল ইসলাম উক্ত শিক্ষকের নামে আরও একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। যার নং-৭২/২০। যা পিবিআই কর্তৃক তদন্ত শেষে উক্ত শিক্ষককে নির্দোষ জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।