সাতদিনের মধ্যে চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশের পর অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ফায়ার সার্ভিসের সমন্বয়ে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে লোহাগাড়া উপজেলায় এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম কলাউজান, চুনতি ও আমিরাবাদ এলাকার মোট চারটি ইটভাটা উচ্ছেদ করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটাগুলো হলো- আমিরাবাদের বিএবি ব্রিকস, পশ্চিম কলাউজানের কেবিকে ব্রিকস ও পিএসবি ব্রিকস ও চুনতি এলাকার সিবিএম ব্রিকস।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম কলাউজান, চুনতি ও আমিরাবাদ এলাকার মোট চারটি ইটভাটা উচ্ছেদ করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ইটভাটার কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, লাইসেন্স নেই। তাছাড়া কৃষি জমির উপর গড়ে উঠেছিল এসব ইটভাটা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ইটভাটাগুলোতে কৃষি জমি ও পাহাড়ি জমি কেটে মাটি নিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছিল। আশেপাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতঘর, মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে।
পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা থেকে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছি আমরা। সোমবার মোট চারটি ইটভাটা উচ্ছেদ করা হয়েছে। লোহাগাড়া উপজেলায় অর্ধ শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসবের মধ্যে ৫-৬টি ইটভাটার বৈধতা রয়েছে। অবৈধ ইটভাটাগুলো আমরা উচ্ছেদ করবো পর্যায়ক্রমে। উচ্ছেদ অভিযান পুরো চট্টগ্রামে চলবে।
অভিযানে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছারসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ চট্টগ্রামের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সাত দিনের সময় দেন। আদালতের আদেশে একইসঙ্গে বৈধ ইটাভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার ও কৃষিজমি বা পাহাড়ের মাটি কেটে ব্যবহারকারীদের তালিকাও দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২৯ নভেম্বর রিট করা হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।