চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসংসদ সদস্য সেখ সালাহ্উদ্দিন জুয়েল বলেছেন, ‘খুলনাসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে। কাজের মান ঠিক রেখে এই কর্মযজ্ঞ যথাসময়ে শেষ করতে হবে। খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। কিন্তু সেটি আজ স্বীকৃতি পেয়েছে। অতি অল্পসময়ের মধ্যে এ কাজের অনুমোদন হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে নগর আ’লীগ আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিক ও খুলনাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এমপি সেখ জুয়েল বলেন, খুলনার উন্নয়ন আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য। এজন্য যথাসময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা এবং কাজের গুণগত মান সঠিকভাবে তদারকি করা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করে খুলনাসহ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জল করুন। তাহলে বিদেশী নাগরিকদের আমাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা জন্মাবে। তিনি আরও বলেন, আমার নিজের সম্মানীর টাকা মসজিদের উন্নয়নে দিয়েছি। এছাড়া বায়তুল আমান, দ্বীলওয়ালি ও নিরালা কবরখানা জামে মসজিদে মধুমতি ব্যাংক থেকে নগদ ১৩ লাখ টাকা আনা হয়েছে। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন, নগরীর সামছুর রহমান রোডে ১৫ তলা বিশিষ্ট বিভাগীয় কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। রূপসায় ১০০০ আসন বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু কনভেশন সেন্টার নির্মাণের অনুমোদন ও শেখ রাসেল ইকোপার্ক নির্মাণে ৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। রূপসায় দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরীর সামনে ১শ’ ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আইসিটি পার্ক নির্মাণের অনুমোদন হয়েছে। শিশু হাসপাতালকে আধুনিকায়ন করতে ১৫ কোটি টাকা, স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও গীর্জাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে প্রায় ৫৩ লাখ টাকা অনুদান প্রদান এবং ৫১ লাখ টাকার সোলার সিস্টেম বরাদ্দ। পাওয়ার হাউজ মোড় হতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত শের-এ বাংলা রোডকে চার লেনে উন্নীতকরণ (কাজ চলমান)। নিজস্ব তহবিল হতে ১০টি এতিমখানায় প্রত্যেকটিতে ৩০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ, উর্ধ্বমুখী করণসহ পুরাতন ভবন মেরামতের জন্য ব্যাপক আর্থিক বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। খুলনা নগর উন্নয়নে অর্থ আনা হয়েছে। যা দ্বারা খুলনাকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর খুলনায় আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যা অতীতের সকল সময়কে ছাড়িয়েছে। খুলনাবাসীর সহযোগিতা রয়েছে বলেই এসব কর্মকান্ড করার সুযোগ পেয়েছি। আরও বলেন, আপনাদের সহযোগিতা পেলে ইনশাল্লাহ খুলনাকে অর্থনৈতিক জোনে পরিণত করা হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নগর আ’লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক, আ’লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, নগর আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, আ’লীগ নেতা এমডিএ বাবুল রানা, মকবুল হোসেন মিন্টু, শ্যামল সিংহ রায়, মোঃ মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, হাফেজ মোঃ শামীম, কাজী জাহিদুল ইসলাম, অসিত বরণ বিশ্বাস, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আনিছুর রহমান বিশ্বাষ, শেখ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মীর বরকত আলী, মনিরুজ্জামান সাগর, যুবলীগ নেতা শফিকুর রহমান পলাশ, শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন, আলমগীর সরদার, ছাত্রলীগ নেতা এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল, মুন্সি নাহিদুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম পিটু, কামরুল ইসলাম, এস এম হাফিজুর রহান হাফিজ, কাজী কামাল হোসেন, মিজানুর রহমান জিয়া, মোঃ শওকত হোসেন, হোসেনুজ্জামান হোসেনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শেখ জুয়েল উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আরও বলেন, ‘সিটি মেয়র খালেক ভাইয়ের নেতৃত্বে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সকল অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নগরবাসীর স্বার্থেই শারদীয় দুর্গাপূজার পরেই রিক্সা থেকে মোটর অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে। নগরীতে যানজট নিরসনে ইজিবাইকে লাইসেন্স দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। নগরীর কাস্টমঘাট থেকে ফুলতলা পর্যন্ত যশোর রোডকে ডিভাইডারসহ চার লেনে উন্নীত করা হবে। আগামী সভায় এর অনুমোদন নেয়া হবে বলে জানান। নগরবাসীকে সুপেয় পানি পান করানোর স্বার্থে ওয়াসার মাধ্যমে মোল্লাহাট থেকে পানি এনে শোধনাগারের মাধ্যমে নগরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া খুলনার উন্নয়নকে ঘিরে মোংলা বন্দরকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রামপালের ফয়লায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
সংসদ সদস্য বলেন, খুলনাকে অর্থনৈতিক জোনে পরিণত করতে খুলনা-মোংলা, মোংলা-ঢাকা, খুলনা-যশোর এবং খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দু’পাশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে উঠছে। এই উন্নয়ন মহাযজ্ঞকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু নির্মাণ করছেন। এই সেতু দিয়ে রেল চলাচল করবে। খুলনা-মোংলা, মোংলা-সাতক্ষীরা, ঢাকা- মোংলা রেললাইনের কাজ চলছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর মধ্যে সকল কাজের অধিকাংশই শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।