চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রকিব উদ্দিন পান্নু উপর হামলার প্রায় ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
রোববার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জোড়াগেট এলাকায় খুলনা ওয়াসার কাজের গাফিলতির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ওয়াসার ঠিকাদার ও পুলিশী হামলার শিকার হন পান্নু। এসময় হামলাকারীরা টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যানকেও মারধর করেন ও ক্যামেরা ভাংচুর করে। এ ঘটনায় উল্টো নির্যাতিত সাংবাদিক পান্নুকে হাতকরা পরায় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বাশার।
ঘটনার প্রতিবাদে রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত মহানগরীর জোড়া গেট এলাকায় খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান সাংবাদিকরা। পরে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেন সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় রকিব উদ্দিন পান্নু বাদি হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বাশার ও পুলিশ সদস্য হরষিত ও রিপনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দেন।
খুলনা ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্পের চায়না প্রকৌশলীর তেড়ে আসা হামলা চালানোর দৃশ্যের ফুটেজ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পরও অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাদের ধরছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
খুলনার সাংবাদিকমহল মনে করছেন, চীনা দূতাবাসে অভিযোগ করে চায়না প্রকৌশলী কেদ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত সাংবাদিক পান্নুর উপর হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন খুলনার পেশাজীবী সাংবাদিকরা। তারা আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা জানিয়েছেন, খুলনা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রকিব উদ্দিন পান্নুর উপর ওয়াসার ঠিকাদারের লোকজন যে হামলা করে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে খুলনা প্রেসক্লাবসহ গোটা সাংবাদিক সমাজ । পুলিশের অতি উৎসাহী একজন ইন্সপেক্টর পান্নুর হাতে হাতকড়া পরিয়ে লাঞ্ছিত করেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটায় ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে সে ব্যাপারে রোববার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নর্থ মোল্যা জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান এবং এডিসি সিটিএসবি মনিরা সুলতানা কে সদস্য ও ট্রাফিক বিভাগের এডিসি হাফিজুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।