চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিছিদ্র নয়। সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো-সিএমএসডি যেসব পিপিই সরবরাহ করেছে তা মানসম্মত নয়। অনেক চিকিৎসক নিজ খরচে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন; কিন্তু কোভিড-১৯ ঠেকাতে পারছেন না। সরকার বাহাদুর তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রেখেছেন।
আর সাংবাদিকদের এ কি অবস্থা? যেন নিধিরাম সরদার। সেফটি ফার্স্ট- কোনভাবেই কার্যকর করার ন্যূনতম ব্যবস্থা তাদের হাতে নেই। মিডিয়া হাউজগুলো যারা চালান তারা কি একটুও বুঝতে পারছেন না মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পাঠাচ্ছেন সহকর্মীদের। জেনে শুনে তারা কেন এটা করছেন। দয়া করে একটু ভাবুন। মৃত্যুর মিছিলে নামাবেন না। সুরক্ষা ব্যবস্থা দিন। তাদের পরিবারগুলোর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। ইতোমধ্যে ঢাকার কয়েকজন সংবাদকর্মী করোনা পজেটিভ হয়েছেন। এর দায় কার? যারা আক্রান্ত শুধুমাত্র তারাই টের পাচ্ছেন নীরবে কিভাবে যন্ত্রণা পোহাতে হয়। কবির ভাষায় বলতে হয়-
“ চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে।
কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে
কভূ আশীবিষে দংশেনি যারে ”
প্রাণ ঝরে গেলে হয়তো রাজধানী হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কিছু সহায়তা পাবে। আখেরে শূন্যতা পূরণ হবে না। কোন অবস্থায় ঢাকার বাইরে সংবাদকর্মী আক্রান্ত হলে তাকে দেখার কেউ থাকবে না। অভিজ্ঞতা তাই বলে।
সংবাদকর্মীরা বুঝতে পেরেছেন এটা বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ নয়। আক্রান্ত এলাকায় অন্য লোক সহযোগিতা করতে আসবে না। আমরা সবাই সমান পরিস্থিতির মধ্যে আছি। কিন্তু সমান সুযোগ পাচ্ছিনা। চলমান করো না পরিস্থিতি সংবাদকর্মীদের বাঁচিয়ে রেখে নতুন ধারার সাংবাদিকতা উপস্থিত করা দরকার। প্রযুক্তি নির্ভরতা আরো বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
চলমান সংকটে যাতে মিডিয়াও বাঁচে – কর্মীও বাঁচে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা ভুলে না যাই, সাংবাদিক বাঁচলে মিডিয়া বাঁচবে। এর বিপরীত চিত্রও আছে। বিজ্ঞাপন সংকটে অধিকাংশ গণমাধ্যম হাউস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন মিডিয়া থাকবে না। সাংবাদিক থাকবে। তাদের কলম বন্ধ হয়ে যাবে; কিন্তু পেটের দায় নেবে কে? একবার ভাবুন তো!
আতিয়ার পারভেজ
সংবাদকর্মী