অনলাইন ডেস্কঃএকাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে যাবজ্জীবন সাজা নিয়ে কারাগারে আছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। সাঈদীর ইসলামী ওয়াজ শুনে নিজের জীবনে যে প্রভাব ফেলেছে তা জানাতে গোলাম মাওলা রনির কাছে ফোন করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ভাগ্নে।
সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রনিকে শুক্রবার (২ আগস্ট) ফোন করেন সিইসির ভাগ্নে। ওই ফোনালাভ নিয়ে রনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘আজকের এই পবিত্র দিনে একটি পবিত্র স্থানে বসে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সম্পর্কে এই মাত্র আমি যা শুনলাম তাতে আমার অন্তর শীতল হয়ে গেল! বর্তমানে জীবিত আছেন এমন চারটি প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে ছোট প্রজন্মের মন মস্তিষ্কে জনাব সাঈদী কিভাবে ঢুকে পড়েছেন তার বাস্তব প্রমাণ পাওয়ার পর মনে হলো- জনাব সাঈদী হয়ত এই যুগের মুজাদ্দেদ (সংস্কারক) এবং জমিনে জান্নাতি মানুষের জীবন্ত প্রতিরূপ!’
‘উপরোক্ত বিষয়টি খুলে বলার পূর্বে প্রতি শুক্রবারে আমার জীবন যাত্রা নিয়ে কিছু বলে নিই! দিনটিতে আমি রোজা রাখি এবং সাড়ে ১১টার মধ্যে মসজিদে চলে আসি! সারা দিন এই পবিত্র গৃহে থাকি এবং মাগরিব অথবা এশা পড়ে বাসায় যাই! এই আট-নয় ঘণ্টা সময়ে আমি সাধারণত কোনো ফোন রিসিভ করি না! কিন্তু আজ একটা ফোন কেন জানি রিসিভ করলাম!’
‘ফোনের অপর প্রান্ত থেকে একটি ইতস্তত কণ্ঠ জানতে চাইলেন আমি গোলাম মাওলা রনি কিনা? তারপর ফোনকর্তা তার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে জানালেন যে, তিনি নবম শেণিতে পড়েন! তার বাবার নাম কাম্বার এবং ফুফার নাম নুরুল হুদা যিনি বর্তমানের সিইসি! কাম্বার আমার বহু পুরনো বন্ধু! কিন্তু গত কুড়ি বছর ধরে কোনো যোগাযোগ নেই! কাম্বারদের পুরো পরিবার কট্টর আওয়ামী লীগ এবং তারা বেশ ধনী এবং অভিজাত! কাম্বারের ছেলে জানালেন যে, তিনি ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র এবং আওয়ামী লীগ করেন! নিয়মিত নামাজ পড়েন- কোরান তেলাওয়াত করেন এবং ইসলামের নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে অনুসরণ করেন!’
‘আমার বন্ধুপুত্র আমাকে জানালেন যে, জনাব দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজ শুনেই তিনি ধর্ম-কর্মে একনিষ্ঠ হয়েছেন! সম্প্রতি সাঈদী সাহেবকে নিয়ে আমার দেওয়া একটি বক্তব্য তিনি ইউটিউবে দেখার পর কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য আমাকে ফোন করেছেন! আল্লাহর দ্বীনের অনুরক্ত সম্মানিত কিশোরটি ফোনে আমার সঙ্গে কথা শেষ করার পূর্বে কান্না জড়িত কণ্ঠে বললেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন- সাঈদী হুজুর মুক্তি পাবেন এবং আবার ওয়াজের ময়দানে গিয়ে নাহমাদুহু বলে তার ওয়াজ শুরু করবেন!’
‘ছেলেটির কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম! তারপর এই স্ট্যাটাস লিখতে শুরু করলাম! আল্লাহর দরবারে বন্ধুপুত্রের জন্য দোয়া চাই এবং তার মনের আকুতিটি যেন কবুল হয় সেই জন্যও দোয়া করছি! আমিন!’