বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে সাড়া বিশ্বে প্রতিনিয়ত দেখা দিচ্ছে সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট। আর এই পানযোগ্য খাবার পানির সংকট সব চেয়ে বেশি দেখা যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমুদ্রতীরবর্তী মানুষদের। বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে মোট পানির শতকরা ৩ ভাগ সুপেয় পানি ও ৯৭ ভাগ লবনাক্ত পানি রয়েছে। সমুদ্রের এই লবনাক্ত পানিকে স্বল্প ব্যয়ে ও সহজ পদ্ধতিতে পরিশোধন করে খাবার উপযোগি বিশুদ্ধ পানি সরবারহের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বাগেরহাটের চিতলমারীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ৫ শিক্ষার্থী।
চিতলমারী উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ৪৫ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা আলাদা আলাদা স্টলের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন করেন। এ সকল প্রকল্পের মধ্যে শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের ৫ জন শিক্ষার্থীর তৈরি করা ‘সি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ’ প্রকল্পটি প্রথম স্থানের কৃতিত্ব অর্জন করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী দলের সদস্যরা হলেন সৈয়দ আকবর হুসাইন, শিল্পী হীরা, আলিফ হোসেন মীর, অভিজিৎ সরকার ও অনন আহম্মেদ রুদ্র।
এ ব্যাপারে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের টিম লিডার সৈয়দ আকবর হুসাইন জানান, ‘সি ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে সমুদ্রের নোনা পানিকে প্রথমে একটি ট্যাঙ্কিতে রেখে ওই পানিকে থিতিয়ে পাইপের সাহায্যে ডিসটিলেশন চেম্বারে নেওয়া হয়। এ চেম্বার থেকে উচ্চ তাপে পানিকে বাষ্পিভূত করা হয়। ফলে ওই পাত্রে লবন থেকে যায় এবং বাষ্পকে পাইপের সাহায্যে কুলিং চেম্বারে আনা হয়। কুলিং চেম্বারে বাষ্প ঘনিভূত হয়ে সুপেয় পানিতে পরিনত হয়। ডিসটিলেশন চেম্বারে থাকা লবনকে পক্রিয়াকরণ করে খাবার উপযোগি লবনে পনিত করা হয়। খাবার উপযোগি লবন থেকে আবার ইলেট্রোলাইস প্রক্রিয়ায় সোডিয়াম ধাতু এবং ক্লোরিন গ্যাস পাওয়া যাবে। এ প্রক্রিয়ায় স্বল্প ব্যয়ে সমুদ্রের পানিকে খাবার উপযোগিকে পানিতে পরিনত যাবে। যা সমুদ্র তীরবর্তী উপকুলবাসীর বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট নিরসনে ভূমিকার রাখবে বলে এই টিমের সদস্যরা দাবী করেন।
গত সোমবার দুই দিন ব্যাপী এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করেণ চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসমত হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক পীযূষ কান্তি রায়, উপজেলা প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুনন্নেছাসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।