বলিউড ভাইজান সালমান খান তার ক্যারিয়ারে একাধিকবার কঠিন সময় পার করেছেন। নিজে স্ট্রাগল করেই বলিউডে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করে নিয়েছিলেন অভিনেতা। প্রথম ছবির পর অভিনেত্রীর অভিনয় থেকে সরে যাওয়া, ভাগশ্রীর এই সিদ্ধান্ত ভেঙে দিয়েছিল সালমান খানকে। এরপর দিনের পর দিন অপেক্ষা করা, সালমান খানকে কেউই যেন ছবির প্রস্তাব দিতে রাজি নন। কীভাবে সবটা সামলাবেন তিনি বুঝে উঠতে পারেননি।
এখানেই শেষ নয়, এরপর জীবনে আসেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের প্রেম। যা তার জীবনে কতটা ঝড় তুলেছিল, তা কারও অজানা নয়। সেই সময়ও শোনা গিয়েছিল সালমান খান ঐশ্বরিয়াকে হুমকি দিয়েছিলেন তিনি মরে যাবেন। যদিও তাতে অভিমানের বরফ কখনো গলেনি।
সালমান খানের এই পরিস্থিতি যে তার সমস্যার ইতি টেনেছিল এমনটা নয়। সেই সময় তিনি এক কঠিন রোগের শিকার হয়েছিল। ২০০১ সাল, সম্পর্ক থেকে সালমান খান যখন বাধ্য হন বেরিয়ে যেতে তখনই তিনি এক কঠিন অসুখে ভুগতে শুরু করেন। যার নাম, ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ায়।
এটি একটি স্নায়বিক রোগ যাতে তীব্র মুখ ব্যথা হয়। খেতে গেলে, কথা বলতে গেলে কিংবা ব্রাশ করতে গেলেও শুরু হতে পারে ব্যথা। এমনকি মুখ স্পর্শ করার মতো দৈনন্দিন কার্যকলাপের ফলেও হতে পারে। কখনো কখনো কোনো কারণ ছাড়াই তীব্র ব্যথায় কাবু হয়ে যান রোগীরা। এই রোগে তীক্ষ্ণ, গুলি করা বা বৈদ্যুতিক শকের মতো ব্যথা সাধারণত মুখের এক পাশে হয়। কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে এই ব্যথা।
বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে সালমান খান জানান, মুখে ক্রমাগত ঘুষির মারার মতো অনুভূতি হয় এই রোগে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথার ধরন ভীষণ কষ্টদায়ক একে সুইসাইড ডিজিজও বলা হয়।
মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনও কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রইল। সেই চাপের কারণেই তীব্র ব্যথা অনুভব করেন রোগী। কোনো টিউমার যদি স্নায়ুটিকে চাপ দেয়, তাহলেও এমনটা হতে পারে। অন্যান্য কিছু স্নায়বিক রোগেও এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
এই রোগ হলে ওষুধ খাওয়া ছাড়া তেমন কোনও উপায় নেই। স্নায়ুর ব্যথা কমানোর ওষুধ কিন্তু সাধারণ ব্যথানাশকের চেয়ে আলাদা। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে ওষুধ। প্রয়োজনে করতে হতে পারে অস্ত্রোপচার।
সালমান খান জানান, ২০০৭ সালের দিকে ‘পার্টনার’ ছবির শুটিং করার সময় ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার লক্ষণগুলো প্রথম অনুভব করতে শুরু করেন। এরপর বেশ কয়েক বছর ধরে তীব্র মুখের ব্যথা সহ্য করে ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্রোপচার করেন তিনি।