সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শুক্রবার , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সুনামগঞ্জ ও যশোর মুক্ত দিবস আজ | চ্যানেল খুলনা

সুনামগঞ্জ ও যশোর মুক্ত দিবস আজ

১৯৭১ সালের এই দিনে (৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ শহর ও যশোর জেলা হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়।

তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকবাহিনী। হানাদার মুক্ত হয়ে সুনামগঞ্জ শহর ‘জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে মুখরিত হয়। একই দিন দুপুরে যশোর সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। প্রথম শত্রুমুক্ত হয় যশোর জেলা।

এ দিন সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা। অবশ্য সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের দিনেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করে পালায় পাক হায়েনারা। এই ঘটনাটি ছিল সুনামগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের জন্য বেদনাদায়ক।

জানা যায়, ৫ নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মোতালেব বেরিগাওঁ, ক্যাপ্টেন যাদব আমবাড়ী বাজার এলাকা ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সুনামগঞ্জ শহরতলির গৌরারং এলাকা হয়ে মুক্তিপাগল সেনাদের নিয়ে এ দিন ভোরে একযোগে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানের মুখে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।

এর আগে ২৭ নভেম্বর পাকসেনারা চারদিক দিয়ে আটঘাট বেঁধে আক্রমণ চালানোর কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিন এখানে আটকা পড়েন। পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় (৬ ডিসেম্বর’ ১৯৭১) আহসানমারায় তালেবসহ ৩ জনকে একরশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়। ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত হওয়ায় সকলে আনন্দিত হয়ে উল্লাস করলেও তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু সহযোদ্ধাদের কাঁদায়। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেকেই শহীদ তালেবের নাম-পরিচয়ই জানেন না।

এদিকে মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স-মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) বৃহত্তর যশোর জেলার (যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল) উপ-অধিনায়ক রবিউল আলম জানান, ’৭১ সালের ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ সময় মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাক আর্মিদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পর্যদস্তু পাকবাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পলায়ন শুরু করে। যশোর সেনানিবাস ছেড়ে তারা ছিন্নভিন্ন হয়ে খুলনার গিলাতলা সেনানিবাসের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। পলায়নকালে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রচণ্ড লড়াই হয়।

৬ ডিসেম্বর বিকালের আগে যশোর সেনানিবাস খালি করে পালিয়ে যায় পাক হানাদাররা। বিকালে মিত্র বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী সেনানিবাসে প্রবেশ করে দখল নেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে শহরে। পাড়া-মহল্লায়ও চলে খণ্ড খণ্ড আনন্দ মিছিল। মুক্তির আনন্দে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে ফেটে পড়েন গোটা জেলার মানুষ।

এর আগে উত্তাল একাত্তরের যুদ্ধ প্রস্তুতিকালে ৩ মার্চ যশোর কালেক্টরেটের সামনে শহরের রাজপথে বের হয় জঙ্গি মিছিল। যশোরবাসী শপথ নেয় স্বাধীনতা যুদ্ধের। এ মিছিলে হানাদার বাহিনী গুলি চালালে শহীদ হন চারুবালা কর। স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনিই যশোরের প্রথম শহীদ। এরপর থেকেই যশোরে সংগঠিত হতে থাকে প্রতিরোধ। নেতৃত্ব দেয় সংগ্রাম পরিষদ। সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হতে থাকে ছাত্র, যুবক ও মহিলাদের। ২৬ মার্চ রাতে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী তদানীন্তন জাতীয় সংসদ সদস্য জননেতা মশিয়ূর রহমানকে তার বাসভবন থেকে ধরে যশোর সেনানিবাসে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

২৯ মার্চ পাক হানাদার বাহিনী যশোর শহর ছেড়ে সেনানিবাসে চলে যায়। ৩১ মার্চ নড়াইল থেকে হাজার হাজার লোকের এক বিশাল মিছিল শহরে আসে। শহরবাসীর সাহায্যে সশস্ত্র মিছিলটি হামলা চালায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। মুক্তি পান সব রাজবন্দি। ৩০ মার্চ যশোর সেনানিবাসের বাঙালি সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ক্যাপ্টেন হাফিজের নেতৃত্বে। পাকবাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধে লেফটেন্যান্ট আনোয়ারসহ অনেকেই এখানে শহীদ হন। জুলাই থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের গতিধারা পাল্টে যায়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা যশোর শহর ও অন্যান্য এলাকায় পাকবাহিনীর অবস্থানগুলোতে প্রচণ্ড আক্রমণ চালাতে থাকে। যশোর মুক্তিযুদ্ধের ৮নং রণাঙ্গন। কমান্ডার ছিলেন মেজর মঞ্জুর। অন্যদিকে, পাকবাহিনীর মোতায়েন ছিল ১০৭নং ব্রিগেড। এর কমান্ডার ছিলেন বিগ্রেডিয়ার হায়াত খান। যশোর সেনানিবাস থেকে শত্রু বাহিনী ৬টি জেলা নিয়ন্ত্রণ করত। ২০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনী যশোর সেনানিবাস দখলে অভিযান শুরু করে। পাকবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলের শক্তিশালী ঘাঁটি চৌগাছা ঘিরে ফেলে সম্মিলিত বাহিনী। মিত্র বাহিনীর গোলার আওতায় আসে যশোর সেনানিবাস।

২২ নভেম্বর রাতে পতন হয় চৌগাছার। হানাদার বাহিনী সলুয়া বাজারে তৈরি করে অগ্রবর্তী ঘাঁটি। এ সময় যশোর সেনানিবাসের তিন দিকেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসে। এ অঞ্চলের পাকবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার হায়াত খান প্রাণ ভয়ে তার অফিস স্থানান্তর করেন খুলনায়। প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ অভিযান চলে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর। যুদ্ধে টিকতে না পেরে ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী পালিয়ে যায় খুলনার দিকে। মুক্ত হয় যশোর জেলা। যুদ্ধবিধ্বস্ত মুক্ত শহরে উড়ে স্বাধীন দেশের পতাকা। এদিকে, করোনার কারণে এ বছর ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস এর কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সকাল ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্যে দিয়ে যশোর মুক্ত দিবস পালিত হবে।

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

ঢাকা মেডিকেল থেকে ‘ভুয়া নারী চিকিৎসক’ আটক

হাসিনার দুঃশাসনের কারণে কোন লোক আ’লীগের নাম বলার সাহস পাচ্ছে না: মাসুদ সাঈদী

জামায়াত ক্ষমতায় এলে দাবি আদায়ে সংগ্রাম করতে হবে না: শফিকুর

খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটানোর ৭দিন পর যুবলীগ নেতার মৃত্যু

প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।