বাগেরহাটের সুন্দরবনের খালে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে একটি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চরাপুটিয়া খালে কুমিরটি অবমুক্ত করা হয়। এ সময় করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির, আইইউসিএনের ম্যানেজার ও প্রকল্পের সমন্বয়কারী সারোয়ার আলম দীপুসহ বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অবমুক্ত করা ৭ ফুট লম্বা কুমিরটির বয়স ১২ বছর। এই গবেষণার মাধ্যমে কুমির কোথায় যাচ্ছে, কুমিরের জীবনাচারণ ও খাদ্যাভাস সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানান আজাদ কবির।
তিনি বলেন, সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কুমিরের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। যার ফলে কুমিরের জীবনাচারণ ও খাদ্যাভাস জানতে আমরা কুমির নিয়ে গবেষণা শুরু করেছি। আশাকরি এই গবেষণা কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও সুন্দরবনে কুমির বৃদ্ধিতে কাজ করবে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ থেকে ১৬ মার্চের মধ্যে চারটি লোনা পানির কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চারটি স্থানে অবমুক্ত করা হয়। এর মধ্যে দু’টি পুরুষ ও দু’টি স্ত্রী কুমির ছিল। অবমুক্ত করা স্ত্রী কুমির দু’টোর মধ্যে একটি সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির জুলিয়েট এবং যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়ি এলাকার মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির এলাকা থেকে ২০২২ সালে উদ্ধার করা কুমির যার নাম মধু। এছাড়া পুরুষ কুমির দু’টোর মধ্যে একটি মাদারীপুর থেকে উদ্ধার করা এবং অন্যটি সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়া এলাকায় ফাঁদ পেতে ধরা ছিল। এসব কুমিরের মধ্যে তিনটি কুমির এক মাস ধরে সুন্দরবনের বিশাল এলাকায় অবস্থান করলেও, একটি কুমির সুন্দরবনের বিশাল এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী তখন এক মাসের কাছাকাছি সময়ে ওই কুমিরটি ১৫০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরেছিল।
অবমুক্তের প্রায় এক মাস পরে ১২ এপ্রিল রাতে চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শৈলদাহ গ্রামের একটি মৎস্য ঘের থেকে কুমিরটি উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। কুমির চারটি এখনও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।