সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশে ঈদের আগের দিনই ঈদ উদযাপন করছেন পিরোজপুরের তিন উপজেলার ১০ গ্রামের ৮ শতাধিক পরিবার। রোববার (৩০ মার্চ) সকালে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের মধ্যে দিয়ে ঈদের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে ওই সব পরিবার।
শরিয়তপুরের শুরেশ্বর দরবার শরীফের মুরিদ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরাজ খন্দকার একদিন আগে ঈদুল ফিতর উদযাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সকাল ৮টায় পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টায় মঠবাড়িয়া উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের হাজী ওয়াহেদ আলী হাওলাদার বাড়িতে, জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আল-আমি মসজিদে সকাল ৮টায় এবং মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের খন্দকার বাড়িতে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার শুরেশ্বর গ্রামের হজরত মাওলানা আহমেদ আলী শুরেশ্বর পীরের অনুসারীরা ১৫০ বছর ধরে প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ওইসব পরিবার আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে বলে তারা জানান।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়া এ ৬ গ্রামের প্রায় ৭ শতাধিক, জেলার কাউখালী উপজেলার বেতকা, শিয়ালকাঠী ও পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ পরিবার, জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৩৫ পরিবার, জেলার সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের কদমতলা ও একপাই জুজখোলা গ্রামের প্রায় ৬০ পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরের আগের দিনই ঈদ উদযাপন করছেন।
কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল ৮টায় আমাদের মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ উদযাপন করি।
নাজিরপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আল-আমিন জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, আমরা শুরেশ্বর পীরের অনুসারী ৩৫টি পরিবার প্রায় ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা পালন করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি।
শরিয়তপুরের শুরেশ্বর দরবার শরীফের মুরিদ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরাজ খন্দকার বলেন, আমার দাদার বাবা ইনাম উদ্দিন খন্দকার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আমরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছি, মঠবাড়িয়া প্রায় ৭ শতাধিকের বেশি পরিবার ৮০ বছর এভাবে ঈদ উদযাপন করে আসছি।