চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ কোরবানির পশুর হাট ও ঈদে বাড়ি যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে ঊর্ধ্বমুখী বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। শুক্রবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সভায় এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দলটির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা পরীক্ষার ফি ধার্য করেছে যা মানুষকে করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করবে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে সক্ষমতা রয়েছে তার অর্ধেকও ব্যবহার করা হচ্ছে না। গত ৪ জুন ঢাকা মহানগরকে ‘রেড’, ‘ইয়েলো’ ও ‘গ্রিন’ জোনে-এ ভাগ করে সংক্রমিতদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হলেও তাও একমাস ধরে দু’টি এলাকা ছাড়া কোথাও বাস্তবায়িত হয় নাই। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য দোষারোপ করা হলেও কার্যত কর্তৃপক্ষের মনোভাবই তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে উৎসাহিত করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম জনমনে শুধু অনাস্থা সৃষ্টি করে নাই তাদের ক্ষুদ্ধ করে তুলেছে। আর এই অবস্থায় এন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও আরটি-পিসিআর ক্রয় নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তার নিরসন না হয়ে সরকারি অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন, বিনা পয়সার পরীক্ষায় অর্থ আদায় ও সর্বোপরি ছয় হাজারের ওপর মিথ্যা সনদ দিয়ে মানুষের হতাশা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আর এর ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশের বিমান পরিবহনকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারছে না। তাদের ফিরতি বিমানে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে রেমিট্যান্স প্রবাহ অক্ষুণ্ন রেখে প্রবাসী শ্রমিকদের চাকরি বহাল রাখতে বিশ্বের দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছেন, সেখানে এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের শ্রমিকদের সম্পর্কে বিদেশে অবিশ্বাস ও সন্দেহ সৃষ্টি করছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভার প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও করোনা সংক্রমণের কারণে ও আতঙ্কে দেশের মানুষের জীবনই যদি অচল হয়ে পড়ে তাহলে তার কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। বরং তা কিছু লুটেরা মালিকেরই স্বার্থসিদ্ধি করবে।
কেবল স্বাস্থ্যক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা কাজ করছে না, এবার যে বাজেট দেয়া হয়েছে তাতেও কোভিড-১৯-কে উপেক্ষা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গীত গাওয়া হয়েছে।
পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক নেতা বর্তমানে সিপিবি’র সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ও পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড জ্যোতি শংকর ঝন্টুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই সভায় যুক্ত হন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান, নজরুল হক নিলু প্রমুখ।