মস্তিষ্ক-কোষ বা নিউরনের তড়িৎ বেগের অস্বাভাবিকতার কারণে যেকোনো ধরনের ক্ষণস্থায়ী শারীরিক প্রতিক্রিয়া বা বাহ্যিক লক্ষণকে খিঁচুনি বলে।
অনেক ধরনের খিঁচুনি হয়ে থাকে। যেমন- সারা শরীরে খিঁচুনি বা জেনারেলাইজড এপিলেপ্সি, শরীরের কোনো এক দিকের খিঁচুনি বা ফোকাল এপিলেপ্সি, শরীরের এক জায়গা থেকে শুরু হয়ে গোটা শরীরে ছড়িয়ে যাওয়া খিঁচুনি।
যে কেউ খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। অতিরিক্ত জ্বর থেকে খিঁচুনি হতে পারে। তবে খিঁচুনি হলে ভয় পাবেন না। কিছু সময়ের মধ্যে এমনিতেই খিঁচুনি থেমে যায়। বেশির ভাগ খিঁচুনির স্থায়িত্ব খুবই কম। ১-২ মিনিট থেকে ৪-৫ মিনিট।
আসুন জেনে নেই হঠাৎ খিঁচুনি হলে করণীয় সম্পর্কে-
আক্রান্ত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারেন তার খিঁচুনি হতে যাচ্ছে, তাহলে দেরি না করে শুয়ে পড়বেন। দাঁড়ানো অবস্থায় কারো খিঁচুনি হচ্ছে দেখলে তাকে মাটিয়ে শুইয়ে দিতে হবে।
কারণ দাঁড়ানো অবস্থায় খিঁচুনি হলে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ সময় বালিশ দেবেন না। একদিকে কাত করে রাখুন। চিত করে শোয়াবেন না। এতে লালা শ্বাসনালিতে চলে যাবে। এর কারণে পরবর্তী সময়ে ফুসফুসের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে জিহ্বা যেন বের না হয়ে থাকে,তাতে জিহ্বা দাঁতের মাঝে পড়ে কেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ঘন ঘন খিঁচুনি ও সঙ্গে পায়খানা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পায়ুপথের খিঁচুনি বন্ধের ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঘিরে না ধরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে দিন।
যাদের খিঁচুনির সমস্যা আছে, তারা পুকুরে গোসল করবেন না। ভারী যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক কাজ করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। নিয়মিত ওষুধ সেবনে খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
যাদের ঘন ঘন খিঁচুনি হয়, তারা মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্টের দোকান থেকে এয়ারওয়ে কিনে নিতে পারেন। খিঁচুনির সময় এয়ার ওয়ে জিহ্বা ও দাঁতের পাটির মাঝে ঢুকিয়ে দিন। কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা চিকিৎসকের কাছ থেকে শিখে নিন।
মাথায় বা চোখেমুখে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।