এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট থেকেঃ বাগেরহাটের শরণখোলায় একটি যৌন-হয়রানি মামলায় দুই মাসের বেশি সময় হাজত বাস করলেও প্রতি মাসে বেতন-ভাতার সম্পুর্ন টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছেন স্কুল শিক্ষক মো. শাহিনুজ্জামান। অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে এমন অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করেছেন।
সুত্র-জানায়, উপজেলার প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাইস্কুলের (ভোকেশনাল শাখার) দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক মোঃ শাহিনুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি ওই ছাত্রী চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান আহম্মেদ গাজীকে অবহিত করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক
শাহিনের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করে উল্টো ওই শিক্ষার্থীকে গালমন্দ করলে তার অপমান সইতে না পেরে তিনি (ইদুর মারার ওষুধ) বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
এ ঘটনার পর তাৎক্ষনিক ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্যে ভর্তি করেন তার স্বজনেরা। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পরের দিন খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রায়েন্দা সরকারী পাইলট হাইস্কুলের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক শাহিনুজ্জামান (৪৪) এবং প্রধান শিক্ষক
সুলতান আহম্মেদ গাজী (৫৮) কে বিবাদী করে গত ২৩ জানুয়ারী শরণখোলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় গত ১১ মার্চ আদালতে হাজির হলে শিক্ষক শাহিনুজ্জামানকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। দুই মাসের বেশি সময় হাজত বাস করে গত ১৯ মে জামিনে আসেন শিক্ষক শাহিনুজ্জামান।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে, স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, শাহিন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক শিক্ষককে ম্যানেজ করায় তারা শিক্ষা নীতিকে উপেক্ষা করে ওই শিক্ষককে বেতন দিচ্ছেন । মামলার পর হাজত বাস করেছেন কিন্তু সাসপেন্ড না করে উল্টো মাসের পর মাস তাকে পুরো বেতন সরবারহ করা হচ্ছে ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান খান বলেন, কোন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে
মামলা হলে বিধি অনুসারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা প্রথমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন এবং তাকে সাময়িক
বরখাস্ত করে তার কাছে কৈফত চাইবেন।
এছাড়া মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে আংশিক বেতন দিবেন। এবং নির্দোষ প্রমানিত হওয়ার পর পুনঃরায় সকল সুযোগ-সুবিধা
ভোগ করতে পারবেন। সম্পুর্ন্ন বেতন-ভাতা দিয়ে থাকলে তা নীতিমালা পরিপন্থি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়েন্দা সরকারী পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহম্মেদ গাজী বলেন, ওই শিক্ষক কোন বেতন
তুলছেন না। বিষয়টি নিয়ে পরে আপনার সাথে কথা হবে । বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা সরদার মোঃ মোস্তফা শাহিন বলেন, বিষয়টি প্রধান শিকক্ষ আমাকে অবগত করেননি। খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষক মোঃ শাহিনুজ্জামান বলেন, পুরো বেতন নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। এছাড়া আমি কাউকে ম্যানেজ করি নাই।