চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ দুই দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। তবে রাজধানীর ১০০ ফিট গরুর হাটে ক্রেতা সমাগম থাকলেও বিক্রি নিয়ে হতাশ বেপারীরা। অধিকাংশ ক্রেতারা গরু-ছাগলের দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। সকাল থেকে এ হাটে ১৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। তবে বিকেলের দিকে আশানুরূপ বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছে হাট কর্তৃপক্ষ।
শনিবার ছুটির দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন পশুর হাটে ক্রেতাদের সমাগমে জমে উঠলেও, বিক্রেতাদের মুখে তেমনি হাসি ফোটেনি। বিক্রেতারা মনে করছেন, গরু আগে থেকেই বিক্রি হলে কম হোক বেশি হোক কিছুটা লাভের আশা থাকে। তবে শেষ সময়ে কেনা দামও পাওয়া যায় না।
রাজধানীর ১০০ ফিট পশুর হাটে ১২টি গরু এনেছেন কুষ্টিয়ার বিক্রেতা নাজমুল হোসেন। শুক্রবার পর্যন্ত তার ৪টি গরু বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে যারা এসেছে সবারই কম বেশি দু-একটি করে বিক্রি হয়েছে। তবে শনিবার একটি গরুও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বনানী, ভাটারাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসে হাটের ভেতরে কেউ দেখছেন, কেউ দাম জানতে চাচ্ছেন, কাউকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দাম যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে।
বগুড়া থেকে এ হাটে ২৭টি গরু এনেছেন বেপারী আসাদুল মিয়া। বিক্রি করেছেন ১১টি। সবগুলো বিক্রি শেষ হওয়া আশা থাকলেও এখনও ১৬টি গরু বিক্রি হয়নি। শনিবার সকাল থেকে একটিও বিক্রি করতে পারেননি বলে কিছুটা হতাশা বোধ করছেন তিনি। তার আরও চার সঙ্গীর অনেকগুলো গরু বিক্রি বাকি রয়ে গেছে। বিক্রি শেষ হলে বাড়ি চলে যাবেন বলে জানান আসাদুল।
তবে ক্রেতারা বলছেন, বিক্রেতারা বেশি দাম চাচ্ছেন এবং গরু ছাড়তে চাচ্ছেন না। একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান বাজারে ভুসির দাম, খৈলের দাম, চাউলের কুড়া, চাউল ভাঙা বা খড় সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় গরুর দামও বেশি। এছাড়া রয়েছে পরিবহন খরচ ও শ্রমিক খরচ। যে কারণে বেশি দামে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
পাবনা থেকে আটটি গরু নিয়ে গত চারদিন আগে ১০০ ফিট হাটে এসেছেন ইব্রাহিম মিয়া। নিজের নিজের লালন-পালন করে এ হাটে বিক্রি করতে এনেছেন। ইতোমধ্যে চারদিনে তিনটি গরু বিক্রি হলেও পাঁচটি নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। অনেকে এলেও দাম জেনে চলে যাচ্ছেন। এ জন্য কিছুটা হতাশ এই বিক্রেতা।
ইব্রাহিম মিয়া জানান, নিজের হাতে গরুগুলোকে বড় করে ঢাকায় বিক্রি করতে এসেছেন। বিক্রি করে বাড়ি ফিরে যাবেন। কিছুটা বড় সাইজের গরু হওয়ায় ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাকাচ্ছেন। তবে কিছুটা লাভ পেলে ছেড়ে দেবেন বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, এ হাটে বিভিন্ন সাইজের গরুর পাশাপাশি বেপারীরা বিভিন্ন সাইজের ছাগলও বিক্রি করছেন। তবে গরুর চাইতে ছাগল বিক্রি কিছুটা বেশি হচ্ছে বলে জানান বেপারীরা।
একাধিক বিক্রেতা জানান, ছাগলের দাম কম হওয়ায় শহরের অনেক মানুষ কোরবানির জন্য ছাগল কিনছে। বিভিন্ন সাইজের ছাগল ৬ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে। তবে দামাদামি করে অনেককে কিনতে দেখা গেছে।
হাট কমিটির ইয়াছিন আরাফাত বলেন, মূলত পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ কোরবানির পশু কিনতে ১০০ ফিট পশুর হাটে এসে থাকেন। কোরবানির পশু দেখে যাচ্ছেন অনেকে। তারা বিকেলে পরিবার নিয়ে এসে কিনেবেন। এ কারণে ছুটির দিন হলেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্রি কিছুটা কম। তবে বিকেল থেকে আশানুরূপ বিক্রি শুরু হবে বলে জানান তিনি।