কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে দিনে ১৩০ টাকা মজুরিতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন নুরুল ইসলাম (৪১)। এই চাকরিকে পুঁজি করে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে দালালি, পণ্য খালাস, বৈধ পণ্যের আড়ালে অবৈধ মালপত্র এনে অল্প সময়ে তিনি প্রায় ৪৬০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। তিন ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষ হয় ভোর ৫টায়। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় জাল টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও মাদক।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, নুরুল ইসলামের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল টাকা, ৩ লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমার মুদ্রা, নগদ ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা ও ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনের কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলাম দালালিসহ নানামাত্রিক অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থের মাধ্যমে ঢাকায় ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট কিনেছেন। এ ছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে মোট ৩৭টি প্লট, বাগানবাড়ি ও বাড়ি বানিয়েছেন। অবৈধভাবে তাঁর অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা।
নুরুলকে টেকনাফ বন্দরকেন্দ্রিক দালাল সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, এই সিন্ডিকেটে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। তারা পণ্য খালাস ও পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অবৈধ মালপত্র খালাসে সক্রিয় ছিল। এ ছাড়া কাঠ, শুঁটকি, আচার ও মাছের আড়ালে ইয়াবাসহ অবৈধ নানা পণ্য নিয়ে পাচার করত। চক্রটি টেকনাফ বন্দর, ট্রাকস্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ করত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অবৈধ আয়ের উৎস আড়াল করতে নুরুল বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেগুলোর মধ্যে এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড ও এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ অন্যতম। তাঁর নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯টি অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।