আগামী বছরের (২০২২ সালের) সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় রোববার (৩১ অক্টোবর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ২০২২ সালে সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস এবং সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা-স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাগুলোতে এ ছুটি পালিত হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন কর্মচারীকে তার নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে অনধিক মোট তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেয়া যেতে পারে এবং প্রত্যেক কর্মচারীকে বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি তাদের নিজস্ব আইন-কানুন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে অথবা যেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের চাকরি সরকার কর্তৃক অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নিজস্ব আইন-কানুন অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে এ ছুটি ঘোষণা করবে।
২০২২ সালের সাধারণ ও নির্বাহী আদেশ মিলিয়ে ২২ দিন ছুটি থাকবে। এর মধ্যে সাধারণ ছুটি ১৪ এবং নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে আট দিন। গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২০২২ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের সরকারি ছুটির মধ্যে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সাধারণ ছুটি ১৪ দিন। তারমধ্যে ৩ দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি দুটা শুক্রবার ও একটা শনিবার। তার মানে ১১ দিন হয়। আমরা আনন্দ করতে পারবো কিন্তু ছুটি ১৪ দিনের।
বাংলা নববর্ষ ও বিভিন্ন ধর্মীয় দিবসে জন্য নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি থাকবে আট দিন। এর মধ্যে তিনদিন সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে।
এছাড়া, ঐচ্ছিক ছুটি ধর্মীয়ভাবে তিন দিন রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও এর বাইরে যে নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে তাদের সামাজিক উৎসবের জন্য দুদিনের ঐচ্ছিক ছুটি রয়েছে।
সাধারণ ছুটি
সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে- ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ২৯ এপ্রিল জুমাতুল বিদা, ১ মে মে দিবস, ৩ মে ঈদুল ফিতর, ১৫ মে বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা), ১০ জুলাই ঈদুল আজহা, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ৫ অক্টোবর দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী), ৯ অক্টোবর ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন)।
নির্বাহী আদেশে ছুটি
আগামী বছরের ১৯ মার্চ শবে বরাত, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ২৯ এপ্রিল শবে কদর, ২ ও ৪ মে ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের দিন, ৯ ও ১১ জুলাই ঈদুল আজহার আগে ও পরের দিন এবং ৯ আগস্ট আশুরার দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে।
ঐচ্ছিক ছুটি
ঐচ্ছিক ছুটির (মুসলিম পর্ব) মধ্যে রয়েছে- ১ মার্চ শবে মেরাজ, ৫ মে ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন, ১২ জুলাই ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন, ২১ সেপ্টেম্বর আখেরি চাহার সোম্বা এবং ৭ নভেম্বর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম।
হিন্দু পর্বের ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৫ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পূজা, ১ মার্চ শিবরাত্রি ব্রত, ১৮ মার্চ দোলযাত্রা, ৩০ মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া, ৪ অক্টোবর দুর্গাপূজা (নবমী), ৯ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ২৪ অক্টোবর শ্যামাপূজা।
এছাড়া, ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ, ২ মার্চ ভস্ম বুধবার, ১৪ এপ্রিল পুণ্য বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল পুণ্য শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল পুণ্য শনিবার, ১৭ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মোৎসব (বড়দিনের আগে ও পরের দিন) হচ্ছে খ্রিস্টান পর্বের ঐচ্ছিক ছুটি।
ঐচ্ছিক ছুটির (বৌদ্ধ পর্ব) মধ্যে রয়েছে- ১৬ জানুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা, ১৩ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তি, ১২ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা, ৯ সেপ্টেম্বর মধু পূর্ণিমা (ভাদ্র পূর্ণিমা) এবং ৯ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে কর্মরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে রয়েছে- ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর অনুরূপ সামাজিক উৎসব।