বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে আগামী ২০২২ সাল পর্যন্ত বুস্টার ডোজ কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।
বুধবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভা শহরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উন্নত দেশসমূহ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক বলেন, ‘উন্নত দেশ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো যতদিন এই ধারণা নিয়ে বসে থাকবে যে তাদের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট টিকার ডোজের ওপর দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলো বেঁচে থাকবে, ততদিন আমি তার প্রতিবাদ করে যাব।’
‘অনুন্নত দেশের লোকজন তাদের দয়ার কাঙাল নয়। সেসব দেশের স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্ক মানুষ এবং সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা অন্যান্য মানুষের বেঁচে থাকার ততটুকু অধিকার আছে, যতটুকু আছে উন্নত দেশের মানুষের।’
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উন্নত দেশগুলোকে বুস্টার ডোজ প্রদান কর্মসূচির ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন গেব্রিয়েসুস; কিন্তু গত জুলাই থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক ও স্পেন তাদের জনগণের ঝুঁকিতে থাকা অংশকে করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, ‘দরিদ্র দেশগুলোতে করোনা টিকার ডোজের তীব্র সংকট চলছে। প্রায় মাস দুয়েক আগে আমি উন্নত দেশগুলোকে বুস্টার ডোজ প্রদান কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলাম।’
‘কিন্তু যেহেতু তখন থেকে এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি, তাই এবার আমি সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বর্ধিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। যেসব দেশ তাদের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে টিকার দুই ডোজ প্রদান করেছে, তাদের সবার জন্যই এটি প্রজোয্য।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৫৫০ কোটি করোনা টিকার ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার ৮০ শতাংশই ব্যবহার করেছে উন্নত দেশগুলো। তিনি আরও বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল- দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা সহায়তা প্রদানের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকল্প কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভসে চলতি বছর ১০০ কোটি করোনা টিকার ডোজ দান করবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিশ্রুত টিকার মাত্র ১৫ শতাংশ ডোজ দিয়েছে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা আর কোনো প্রতিশ্রুতি চাই না। এখন আমরা শুধু টিকার ডোজ চাই।’