চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসাউথ এশিয়ান গেমসে (এস এ গেমস) এ পর্যন্ত সাতটি সোনা জিতেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে কারাতেতেই জিতেছে তিনটি সোনা। মোহাম্মদ আল আমিন, মারজান আক্তার ও হোমায়রা আক্তার এ তিন কারাতে খেলোয়াড়ের হাত ধরেই এসেছে পদকগুলো। নিশ্চিতভাবেই দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তার তিনজন। তবে তাদের নেপথ্যেও একজন নায়ক রয়েছেন। তিনি তেসুরো কিতামুরা।
নাম শুনে অবাক হওয়ার আগেই জেনে নিন, তিনি একজন জাপানিজ নাগরিক। সোনাজয়ী কাতারে খেলোয়াড়দের তৈরি করার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদানই তার। বাংলাদেশপ্রেমী এ জাপানিজ কারাতে দলের প্রধান উপদেষ্টা কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কিতামুরা। এ দায়িত্বের বিনিময়ে দৈনিক মাত্র ২৫০ টাকা সম্মানী নেন তিনি। আর এই ২৫০ টাকার কোচের নেতৃত্বেই এসএ গেমসের এবারের আসরে তিনটি সোনা জিতেছে বাংলাদেশ।
কিতামুরা প্রথমবার ঢাকায় এসেছিলেন ১৯৮৫ সালে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) মাধ্যমে সেবার ঢাকা এসেছিলেন তিনি। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে বাংলাদেশে থেকেছেন তিনি। আর এতেই দেশটিকে নিজের করে নিয়েছেন কিতামুরা। এখন তিনমাস পরপর দেশে জুটি কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন বাংলাদেশ। এ দেশে কারাতে কোচিং করানোর পাশাপাশি একটি জাপানি কোম্পানিতে চাকরিও করেন তিনি।
ইতোমধ্যেই জীবনের ৩৪টি বছর বাংলাদেশের সঙ্গে কাটিয়ে ফেলেছেন কিতামুরা। এ দেশকে আপন করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভালোও বেসে ফেলেছেন তিনি। এছাড়া শিখে ফেলেছেন বাংলা ভাষাটা। তাইতো কিতামুরা বাংলাদেশ নিয়ে বলেন, ‘এখন এটাই আমার প্রথম বাড়ি। আমি এখানকার মানুষ ও পারিবারিক বন্ধন পছন্দ করি। এখানকার মানুষেরা হৃদয়বান।’
বাংলাদেশকে ভালো না বাসলে মাত্র ২৫০ টাকা পারিশ্রমিকে দেশের জন্য কাজ করা সম্ভব হতো না। কিতামুরাও তাই কখনও পারিশ্রমিক নিয়ে ভাবেননি। কিতামুরার ভাষায়, ‘গেমসের জন্য প্রতিদিন ২৫০ টাকা বরাদ্দ ছিল। পারিশ্রমিক নিয়ে আমি মোটেও ভাবিনি। তবে ভবিষ্যতে আমার সঙ্গে চুক্তি করতে হলে ভালো সম্মানী দিয়েই করতে হবে।’
কিতামুরার ২৫০ টাকা সম্মানীর ব্যাপারটি নিশ্চিত করে কাতার ফেডারেশনের সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি কোচের জন্য যে ২৫০ টাকা বরাদ্দ থাকে, তার জন্যও সে একই নিয়ম। এর বাইরে তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। ভালো সম্পর্ক থাকায় তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। তবে ভবিষ্যতে তাঁর সঙ্গে চুক্তি করার ইচ্ছে আছে আমাদের।