চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বিভিন্ন ক্যাডারে দুই হাজার ২০৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে আজ মঙ্গলবার বিকেলে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনসহ সাধারণ ক্যাডারে ৬১৩ জন, সহকারী সার্জন হিসেবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে ২২০ জন, কারিগরী বিভিন্ন ক্যাডারের ৫৩২ জন এবং শিক্ষা ক্যাডারে ৭৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিএসসির কর্মকর্তারা।
ফলাফল কমিশনের ওয়েবসাইটে (http://www.bpsc.gov.bd) পাওয়া যাবে। এ ছাড়া টেলিটকের মাধ্যমেও এসএমএস করে ফলাফল পাওয়া যাবে।
এর আগে ফলাফল প্রকাশের জন্য মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় কর্ম কমিশনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ৫ মার্চ ৩৮তম বিসিএসের কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য চাহিদা পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ২০ জুন এই নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ প্রার্থী আবেদন করেন। ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তাতে উত্তীর্ণ হন ১৬ হাজার ২৮৬ জন। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। ২০১৯ সালের ১ জুলাই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলে সেখানে পাস করেন নয় হাজার ৮৬২ জন। বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লাগার এটি নতুন রেকর্ড।
এ বিষয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় অনেক যোগ্য প্রার্থী কম নম্বর পেয়েছেন। পরীক্ষকের অবহেলায় কোনো যোগ্য প্রার্থী যেন বঞ্চিত না হন, সেজন্য ৩৮তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো দুই জন নিরীক্ষক দিয়ে খাতা মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু, বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুই নিরীক্ষকের মধ্যে নম্বরের ব্যবধান অনেক বেশি। তখন আবার তৃতীয় পরীক্ষক দিয়ে সেই খাতা মূল্যায়ন করতে হয়েছে। ফলে লিখিতের ফল দিতেই এক বছর লেগে গেছে, দেরির কারণ এটিই। তবে, এর ফলে যোগ্যরাই শেষ পর্যন্ত চাকরি পাবেন। কেউ আর বঞ্চিত হবেন না।’
লিখিত পরীক্ষাল ফল প্রকাশের পর গত বছরের ২৯ জুলাই থেকে ৩৮তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। নয় হাজার প্রার্থীর ভাইভা নিতে লাগে আট মাস। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সেই মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর থেকে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের যে অপেক্ষা শুরু হয়েছিল, তা আজ শেষ হলো। পরবর্তী ধাপে এখন স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ যাচাইয়ের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করবে। এরপরেই সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা চাকুরিতে যোগদান করতে পারবেন। ধারাবাহিক এতোসব প্রক্রিয়া ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে একেকটি বিসিএসে নিয়োগে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর লেগে যায়। পৃথিবীর আর কোন দেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এতো সময় লাগে না। পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়োগ পদ্ধতির কিছু সংস্কার করে এই সময় কমিয়ে আনা সম্ভব।