আর মাত্র ৫টি স্প্যান বসানো হলেই ৬ হাজার ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতু তার পূর্ণাঙ্গ কাঠামো পাবে। দৃশ্যমান হবে শতভাগ। এরপর চলবে রেল ও সড়ক স্ল্যাব বসানোর কাজ। মহান বিজয় দিবসের আগেই সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছে কর্তৃপক্ষ।
সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে বুধবার (১১ নভেম্বর) অথবা বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সেতুর ৯ ও ১০ নম্বর খুঁটিতে ৩৭তম স্প্যান (স্প্যান ২-সি) স্থাপন করা হতে পারে। এরপর ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বর খুঁটিতে ৩৮তম স্প্যান ও ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটিতে ৩৯তম স্প্যান (স্প্যান ২-ডি) বসানোর কথা রয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর পদ্মাসেতুতে ৩৬তম স্প্যান বসানো হয়। এতে দৃশ্যমান হয় ৫ হাজার ৪০০ মিটার দৈঘ্যের সেতু। মাওয়া প্রান্তে ২ ও ৩- নম্বর খুঁটিতে ৩৬ তম স্প্যনাটি বসানো হয়। ৩৫তম স্প্যানটি বসেছিল গত ৩১ অক্টোবর।
পদ্মাসেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর ৩৬তম স্প্যান স্থাপনের পর আমরা আশা করছি আগামী বিজয় দিবসের আগেই ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকী সব স্প্যান বসিয়ে দিতে পারবো ইনশাল্লাহ। তিনি জানান, সেতু মাওয়া প্রান্তের প্রথম স্প্যানটি ‘১-এ’ স্থাপন করলেই সেতুর মাওয়া প্রান্তের সাথে বন্ধন হয়ে যাবে। এছাড়া, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটিতে ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান (স্প্যান ২-এফ) ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে, বলেন তিনি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় পদ্মার মাওয়া প্রান্তে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের বাইরে স্টক ইয়ার্ডে রাখা আছে ৩টি স্প্যান। বাকি দুটি স্প্যানও প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে ওয়ার্কশপের ভিতরে।
পদ্মায় এই মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। নদী শাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লিমিটেড।
সেতুটিতে স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর অন্যান্য কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। এরইমধ্যে ২৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে বসানো হয়েছে ১১৬৬টি ও ২৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১৬৪৬টির বেশি বসানো হয়ে গেছে। সেতুর উভয় প্রান্তে ভায়াডাক্টের ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে স্থাপন হয়েছে ২৫৮টি।
৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৫০ ভাগ। সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এবং শেষ হওয়ার সংশোধিত শিডিউল ২০২১ সালের জুন মাসে।
যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা ধীরগতি আসায় কাজ শেষ হতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।