আন্তর্জাতকি ডেস্কঃমহানগরীর বয়রা এলাকায় ১ দশমিক ৩৫ একর জমিতে নির্মাণ হবে ১০ তলা বিশিষ্ট খুলনা কর ভবন। প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘খুলনা কর ভবন নির্মাণ’। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে ৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুলনা কর ভবনসহ ১২ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ভৌত সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নত কর্ম পরিবেশে করদাতাদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে খুলনা কর অঞ্চলে সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় সদরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের খুলনা কর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মুজগুন্নী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে কর আদায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে বর্ধিত কর আহরণ কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক নথিপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। একই সাথে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আয়কর মেলা, আয়কর দিবস ও আয়কর সপ্তাহসহ বিভিন্ন ইভেন্টগুলো পালনে উপযুক্ত স্পেস পাওয়া যায় না। এসব কারণে নিজস্ব কার্যালয় প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। খুলনা কর অঞ্চলের ২২টি সার্কেলের মধ্যে ৭টি সার্কেল অফিস, ২টি রেঞ্জ অফিস, ১টি বিভাগীয় প্রতিনিধির কার্যালয়, ট্যাকসেস আপীলাত ট্রাইব্যুনাল অফিস, কর কমিশনার (আপীল) অফিস, কর আপীলাত রেঞ্জ-১ ও ২, জরিপ রেঞ্জ এবং জরিপ সার্কেল ১ ও ২ কার্যালয়সহ ১৯টি অফিস স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রস্তাবিত ‘খুলনা কর ভবন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। ভবনটি খুলনা মহানগরীতে রাজস্ব বোর্ডের নিজস্ব ১ দশমিক ৩৫ একর জমিতে একটি সেমি বেইজমেন্টসহ ১০ তলা পর্যন্ত নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্পের ডিপিপির উপর ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভায় কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ডিপিপি পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করে। পুনর্গঠিত ডিপিপির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা (জিওবি) এবং বাস্তবায়নকাল প্রস্তাব করা হয় জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত।
এ প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, একটি সেমি বেইজমেন্টসহ ১০ তলা ভবন নির্মাণ, বহিঃবিদ্যুতায়ন ও ২৫০ কেভিএ সাব-স্টেশন নির্মাণ, এয়ারকুলার, সোলার সিস্টেম ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সংগ্রহ, ভূমি উন্নয়ন-৪৫০০ ঘন মিটার, অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ-২৫০০ বর্গমিটার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ-২৯৫ মিটার, সারফেইস ড্রেন নির্মাণ-৪১৫ মিটার, বহিঃপানি সরবরাহ ও সেনিটারী এবং বৃষ্টির পানি ধারণ, সিকিউরিটিজ ব্যবস্থা।
খুলনা কর অঞ্চলের উপ-কমিশনার (সদর দপ্তর, প্রশাসন) খোন্দকার তারিফ উদ্দিন আহমেদ সময়ের খবরকে জানান, নিজস্ব ভবনটি নির্মাণ হলে একই স্থানে ট্যাক্স, আপীল, জরিপ, উকিলবারসহ নানা অফিস হবে। এখানে ৫০০ আসন বিশিষ্ট একটি মাল্টিপাসপাস হল থাকবে। ১৫০-২০০ আসন বিশিষ্ট মাসিক সভাকক্ষ থাকবে। করদাতাদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে। এটি হবে সর্বাধুনিক ভবন।
খুলনা কর অঞ্চলের যুগ্ম-কমিশনার মোঃ মঞ্জুর জানান, পুরাতন কর ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিগত ৪/৫ বছর ধরে ভবন ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। একনেকে এই প্রকল্প অনুমোদন হওয়ায় এবং ভবনটি নির্মাণ হলে করদাতাদের সর্বাধিক সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, খুলনা শহরে দৃষ্টি নন্দন ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন এই ভবনে করদাতাদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার, ব্যাংকসহ সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে।