খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৯.৩০ মিনিটে ওরিয়েন্টেশনের দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন হচ্ছে নিজেকে গড়ে তোলার শ্রেষ্ঠ সময়। এখান থেকে পরবর্তী জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিতে হয়। সঠিক পরিকল্পনার আলোকে অন্যদের তুলনায় নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে তুলতে হয়। এজন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি কো-কারিকুলা ও এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসেও গুরুত্ব দিতে হবে। সবকিছু আনন্দের সাথে শিখতে হবে। নিজেকে অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জীবনে কোনো হতাশা রাখা যাবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সহপাঠীদের সাথে পারস্পারিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা দেশ-বিদেশে সফলতার সাথে তাদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। তাদের পথ অনুসরণ করে তোমাদেরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে হবে। পরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগতভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বিশ্বজনীন। বিশ্ব আজ প্রতিযোগিতামূলক। তোমরাও একটি প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এখানে এসেছো। বেশকিছু স্বাতন্ত্র্য ও মানগত পার্থক্যের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম আজ সবক্ষেত্রে ছড়িয়ে আছে। একাডেমিক ও গবেষণাক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য রাখছে। এখানকার গ্রাজুয়েটদের সফলতার হার অনেক বেশি। তাদের পথ অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তোমাদের জীবনকে সাজাতে হবে। নিজেকে বিশ্বমানের হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ এবং চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম। আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. সালাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কপিং এন্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘পারসোনাল এন্ড একাডেমিক গোলস’, ‘বিল্ডিং সোশ্যাল কানেকশন’, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টস’ বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এ ছাড়াও আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শামীম আহসান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি এবং ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের নবাগত শিক্ষার্থীা অংশগ্রহণ করেন।