অনলাইন ডেস্কঃ রাজধানীর প্রধান তিনটি সড়কে রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন রিকশা চালকরা। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাজধানীর কুড়িল-রামপুরা-মালিবাগ সড়কের বিভিন্ন অংশ অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন রিকশা চালকরা।
অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রিকশা চালকদের দাবি, প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে হবে। না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এর আগে, গতকালও একই দাবিতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আন্দোলন করেছিলেন তারা। ফলে গতকালের মত আজও কুড়িল-রামপুরা-প্রগতি সরণিতে যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুরগামী সব যাত্রী।
‘সড়ক আছে যেখানে, রিকশা চলবে সেখানে’, ‘চলবে চলবে-রিকশা চলবে’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে আন্দোলন চলবে’- এসব নানা স্লোগানে মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন রিকশা চালকরা।
একইভাবে খিলগাঁও, রামপুরা বাজার, রামপুরা ব্রিজ, উত্তর বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা এবং কুড়িল এলাকায়ও অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এতে এসব সড়কে থাকা যানবাহনগুলো আটকা পড়েছে। আন্দোলনের কারণে এসব যানবাহনের যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
মালিবাগ আবুল হোটেল এলাকার বিক্ষোভকারী রিকশা চালকদের একজন নুরউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকার ঘোষণা দিয়েছে মেইন রোডে রিকশা চালানো যাবে না। কিন্তু এ ঘোষণা মানলে আমাদের না খেয়ে থাকা লাগবে। কারণ শুধু গলিতে থেকে রিকশার ভাড়া পাওয়া যায় না।’
আরেক চালক মো. জামাল বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায়ে আমরা গতকালও বিক্ষোভ করেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না দাবি মেনে নেওয়ার। তাই আজও সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আন্দোলন শুরু করেছি। আজও দুপুর ১টা-২টা পর্যন্ত আন্দোলন করবো। যদি কোনো আশ্বাস না পাই, তাহলে কালও দিনভর রাস্তায় আন্দোলন করব। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
রাজধানীর তিন রুটে রিকশা নিষিদ্ধ
এদিকে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে এবং বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে সড়কের পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে অনুরোধ জানাতেও দেখা যায় তাদের।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কুদ্দুছ ফকির সারাবাংলাকে বলেন, ‘সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করছি আমরা। আশা করছি বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে যাবেন। সেই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে সেজন্য আমাদের সদস্যরা সতর্ক রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রিকশা চালকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন হতে পারে না। দাবি নিয়ে তারা সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলুক। তবুও সড়ক থেকে সরে যাক।’
একই কথা জানালেন বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রিকশা চালকরা যাতে কোনো ভাঙচুর কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে সে জন্য আমরাও সড়কে আছি।’
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই ঢাকা সিটি করপোরেশন (দক্ষিণ-উত্তর) ও ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটির (ডিটিসিএ) সমন্বিত বৈঠকে ঢাকার তিন রুটে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হওয়া রুটগুলো হলো- গাবতলী থেকে আজিমপুর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে শাহবাগ মোড়, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে সায়েদাবাদ রুট।