অনলাইন ডেস্কঃবিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এড. নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি নয়, বর্তমান সরকার মহাসংকটে পড়েছে। আর এই সরকার দেশ ও জনগনকেও সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আজকে বাংলাদেশে একটি লুটেরা ডাকাত দল তারা দেশটাকে দখল করে দেশের সমস্ত সম্পদ, অর্থ, মানুষের ভোটাধিকার সবকিছু লুন্ঠন করেছে। দেশের ব্যাংক, বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লুন্ঠন করা হচ্ছে। যারা লুন্ঠন করছে তারা এইসব ব্যাংকের মালিক, এমডি, ম্যানেজার। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু একটি গোষ্ঠী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। গত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দেশের শাসন ফ্যাসিবাদী শাসনে পরিণত হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে জনগণ দেখতে চায় না, জনগণ পরিবর্তন চায়। এই সংকট থেকে মুক্তি চায়। সংকটাপন্ন দেশকে বাঁচাতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে কোন বিকল্প নেই।
গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর অভিজাত হোটেল এ্যাম্বাসেডরে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী ২৫ জুলাই খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ সফলের লক্ষে মহানগর ও জেলা বিএনপি’র যৌথ আয়োজনে এ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
এড. নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, কৃষকের করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উৎপাদিত পাকা ধানে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ করছে। ন্যায্য মূল্য না পেয়ে কৃষকেরা মাঠে উৎপাদিত ফসলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মৌসুমে পাট উৎপাদন ব্যয়ের অর্ধেক টাকাও পাচ্ছে না। এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ দেশে বেকারত্বতা দিন দিন বাড়ছে, যার কোন সীমা পরিসীমা নেই। ৫ লক্ষ টাকার বাজেট দিয়ে দেশকে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। দেশের বাজার মূল্য লাগামহীনভাবে ছুটছে, তাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা এই ব্যর্থ সরকারের নেই।
তিনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে রাষ্ট্রীয়যন্ত্র ব্যবহার করছে। অন্যদিকে তারা জানে এ দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ তাদের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারকে বিশ্বাস করে। এই জন্য তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে। অসুস্থ অবস্থায় দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে চায় না। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। আজকে এই ছাত্র, যুবক, কৃষকসহ দেশের জনগণ এই ব্যর্থ সরকারের পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনের জন্য দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করার কোন বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন ঐক্য, ঐক্যবদ্ধভাবে সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে এক কাতারে এসে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের দুঃশাসকের পতন ঘটাতে হবে।
সভায় অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সভায় দেশে মহামারী আকারে নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা, গুম বেড়ে যাওয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। একই সাথে সন্ত্রাস দমনে সন্ত্রাস দমনে সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সভায় সংসদকে পাশ কাটিয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় পাটকল শ্রমিকদের জাতীয় মজুরি কমিশনের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়াসহ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য দিকে ব্যর্থ হওয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
সভায় খুলনা বিভাগের অবিসংবাদিত নেতা সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। একই সাথে কারাগারে আটক অবস্থায় কুষ্টিয়ার বিএনপি নেতা এমএ শামীম আরজুসহ আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
সভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান, গণতন্ত্র ও জনগনের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি অপশাসন, নারী ও শিশু নির্যাতনগুম, খুন বন্ধ, স্বাধীন বিচার বিভাগ ও স্বাধীনগণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠা, শ্রমিক ও কৃষকদের দাবি বাস্তবায়ন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুট, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও ভোট ডাকাতির সংসদ বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি আগামী ২৫ জুলাই খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার জন্য খুলনা বিভাগের জনগন ও সকল নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশ সফল করতে সকল জেলা উপজেলায় কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভা থেকে কর্মসূচি সফল করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সভা থেকে কারাগারে আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সভায় ৮টি উপ-কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও কেসিসি’র সাবেক মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনির পরিচালনায় সভায় বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান ও সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, বিএনপি’র প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, সাবেক ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম বকুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, খুলনা জেলা বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল ইসলাম মনা, মেহেরপুর জেলার সভাপতি মাসুদ অরুন, বাগেরহাট জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক রহমতউল্লাহ পলাশ, নড়াইল জেলার সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাবলু, যশোর জেলা বিএনপি’র সদস্য এড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য সাহারুজ্জামার মোর্ত্তজা, টিএম আইয়ুব, আবুল হোসেন আজাদ, ফারাজী মতিয়ার রহমান, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মালেক, যশোর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসের খোকন, খুলনা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাঃ গাজী আব্দুল হক, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম মুছা, খন্দকার আব্দুল জব্বার ঘোনা, মোঃ মজিবুল হক মালেক, মাগুরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক আকতার হোসেন, আহসান হাবিব কিশোর, ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এড. এম এ মজিদ, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জাভেদ মাসুদ মিল্টন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মোঃ শরীফুজ্জামান ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-সম্পাদক জাকির হোসেন।