চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ কর-অঞ্চল খুলনার বয়রাস্থ কর ভবন এবং কর ভবনের গ্যারেজ অপসারণের নিলাম কাজের সিডিউল জমা দেওয়ার শেষ দিনে গতকাল বুধবার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন সাধারণ ঠিকাদাররা। এর ফলে এই দু’টি ভবনের নিলাম কাজে দু’শতাধিকের বেশি সিডিউল বিক্রি হলেও জমা পড়েছে মাত্র ৬টি। খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২ এ ঘটনাটি ঘটেছে। সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যবসায়ীরা জানান, সারাদেশেই টেন্ডারবাজি, জুয়া, ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এরই মধ্যে খুলনার নূরনগরস্থ গণপূর্ত ভবনে প্রকাশ্যে ঠিকাদারদের সিডিউল জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। নগরীর শেখপাড়া ও বিশ্বাস বাড়ির একাধিক লোকজন এই নিলাম টেন্ডারে বাধা দেওয়ায় ভূমিকা পালন করছে। সরেজমিনে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক লোকজন মোটরসাইকেল নিয়ে গণপূর্ত অফিসের মেইন গেটের সামনে অবস্থান করছে। এমন লোক সমাগম সাধারণ অফিসটির সামনে দেখা যায় না। এ সময় অনেকের মুখে বিশ্বাস বাড়ির ক্ষমতাসীন দলের টেন্ডার সিন্ডিকেটে খুলনার আলোচিত নেতার নির্দেশে তার ছেলের নেতৃত্বে টেন্ডারবাজি হচ্ছে বলে জানা যায়। পরে এ প্রতিবেদক ঐ নেতার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি পারিবারিক কাজে নগরীর বেসরকারি ক্লিনিকে অবস্থান করছি এবং আমার সাথেই আমার ছেলে আছে। এই সব কাজে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে তা দুঃখজনক।
গণপূর্ত বিভাগ-২ সূত্রে জানা যায়, কর-অঞ্চল খুলনার বয়রাস্থ কর ভবন এবং কর ভবনের গ্যারেজ অপসারণের নিলাম কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর। ১ অক্টোবর নিলাম দরপত্র বিক্রয়ের সর্বশেষ তারিখ ছিল। এ সময় অবদি দু’টি নিলাম কাজের বিপরীতে দু’শতাধিকেরও বেশি সিডিউল বিক্রি হয়। সিডিউলের মূল্য ছিল ৫শ’ টাকা। গতকাল ২ অক্টোবর দুপুর ১২টার মধ্যে সিডিউল জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল। পরবর্তীতে সাড়ে ৩টায় সিডিউল দরপত্র খোলা হয়। এ সময় মাত্র ৬টি সিডিউল পাওয়া যায়। যা শেখপাড়া ও বিশ্বাস বাড়ি এলাকার। সূত্রটি আরও জানায়, নিলাম দরপত্রের উদ্বৃত মূল্যের শতকরা ১০ ভাগ অর্থ বাংলাদেশের যে কোন তফসিলি ব্যাংক হতে পিও/বিডি আকারে নির্বাহী প্রকৌশলী, খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২ খুলনার অনুকূলে জমা দেওয়াসহ ৭৫ দিনের মধ্যে ভবনের মালামাল অপসারণের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ব্যবসায়ীদের আরেকটি সূত্র জানায়, কর ভবনের নিলামের বুক ভ্যালু ৮ লাখ এবং গ্যারেজের বুক ভ্যালু ১ লাখের নিচে নির্ধারণ করা হয়েছে।খুলনা কর ভবনের মুল্য নির্ধারনে জরিত গণপূর্ত বিভাগ- ২ এর কিছু অসাধু প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা যোগসাজসে এই বিশাল ভবন ও গ্যারেজের বুক ভ্যালু করছেন সর্বমোট সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা । যে সকল কর্মকর্তা কর ভবনের বুক ভ্যালু নির্ধারনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ তাদের বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন । তারা কি ভাবে কোন প্রক্রিয়ায় ৫তলা কর ভবনের নিলাম এত কম মুল্য নির্ধারন করছেন । তাহলেই বেড়িয়ে যাবে খুলনা কর ভবনের সিন্ডিকেটের মুল হোতা ও গণপূর্ত বিভাগ- ২ এর কিছু অসাধু কর্মকর্তার নাম । অথচ টেন্ডারে দেখা গেছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বুক ভ্যালু থেকে বেশি মূল্যে টেন্ডার জমা দিয়েছেন।
নিলাম সিন্ডিকেটের বিষয়ে কথা বলার জন্য গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুমের ব্যবহৃত (০১৭১৬—৭৮) একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।