চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ নাটোরের সিংড়ার রাখালগাছা বাজারের যাত্রীছাউনী দখল করে গুদাম ঘর বানানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. মিনহাজ উদ্দিন সরদারের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে যাত্রীছাউনীটি দখলে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ জনগণ। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিনের দাবি, তিনি যাত্রীছাউনী দখল করে রাখেনি। তার প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
সূত্রে জানা গেছে, রোদ ও ঝড়-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এলজিএসপি-২ এর অর্থায়নে দুই লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ‘রাখালগাছা বাজার যাত্রীছাউনী’ নির্মাণ করা হয় কিন্তু কয়েক মাস পরে ছাউনীর চারদিকে ইটের প্রাচীর তুলে দখল করে নেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন সরদার।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, যাত্রীছাউনীটি তার বাড়ির পাশে হওয়ার কারণে গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাউনীটি প্রায় তিন বছর ধরে মিনহাজ উদ্দিন দখল করে ব্যবহার করছেন। শিগগির যাত্রী ছাউনীটি দখলমুক্ত করে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হযরত আলীর মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যাত্রীছাউনীটি উদ্বোধনের পর বাজারের জনসাধারণ বসে গল্প-গুজব করতো। রোদ-বৃষ্টিতে অনেকেই বিশ্রাম নিত। আবার মাঝে মাঝে এখানেই গ্রামের সালিশ-দরবার করা হতো। কিন্তু সেটি এখন তালাবদ্ধ থাকে।
কে তালা দিয়ে রেখেছেন-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এটা আমার কাছ থেকে নাই বা শুনলেন।
এই ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মো. নাজমুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি যাত্রীছাউনী তালা দিয়ে রাখা হয়েছে বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে কে বা কারা রেখেছেন এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
পাশবর্তী ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব বলেন, যাত্রীছাউনী তালা দিয়ে রাখা হয়েছে এটা ঠিক। তবে কে দিয়েছেন এটা বলা কঠিন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই ছাউনী সেবা কেন্দ্র বা আশ্রয়স্থল। ঝড়-বৃষ্টি হলে জনগণ এখানেই তো আশ্রয় নেবে। এটা বন্ধ রাখায় জনগণের সমস্যা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে এ বিষয়ে তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এটা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমার বিপক্ষের লোকজন এটা একটা অপ্রচার চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যাত্রীছাউনীতে গ্রামের মানুষের কিছু ধান রয়েছে। আমার কোনো কিছু নেই। খুব তাড়াতাড়ি এটা ফাঁকা করে দিয়ে যাত্রীছাউনীটি সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান মিনহাজ উদ্দিন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে নাটোর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম রাব্বি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।