চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ ঢাকায় ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর দু-একদিন পরই ঢাকা ছাড়েন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। এরপর ছিলেন আত্মগোপনে। নিয়েছিলেন এমন সব পদ্ধতি, যাতে থাকে খুঁজে না পাওয়া যায়। এমনটি জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।
রোববার (৬ অক্টোবর) র্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মলনে তিনি এসব তথ্য জানান। কিন্তু কী পদ্ধতি অবলম্বন করে সম্রাট আত্মগোপনে ছিলেন তা বলেননি বেনজীর আহমেদ।
তবে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করার কারণেই সম্রাটকে ধরতে দীর্ঘ সময় লেগেছে র্যাবের। বেনজীর আহমেদ বলছিলেন, আত্মগোপনে থাকাকালে উনি এমন সব পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন যেন তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া না যায়। এ জন্য উনাকে খুঁজতে আমাদের দীর্ঘ সময় লেগেছে।
যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতির পদ থেকে রোববার তাকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে আজ ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
র্যাব ডিজি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা একটি ভাইব্র্যান্ট ডেমোক্রেসি এবং অর্থনীতিভাবে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। এ রকম পরিবেশে দেশে কারও হাওয়া হওয়ার কোনো কারণ নেই। পাশাপশি বলতে চাই, এ দেশের সবাই সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবেন, এটা যেমন সত্যি, তেমনি দয়া করে কেউ কোনো ধরনের কোনো অবৈধ বা বৈআইনি কাজে লিপ্ত হবেন না। কারণ, কোনো না কোনো সময় ডেফিনেটলি এটার জন্য আপনাকে পে করতে হবে। এবং সেটা আইনের মাধ্যমে হবে।’
তিনি বলেন, ক্যাসিনো নিয়ে কাজ করতেই একাধিকবার তার নাম পেয়েছি। তাছাড়া ক্যাসিনোতে জড়িতের বিষয়ে গণমাধ্যমেও তার নাম এসেছে। ডেভিনেন্টলি এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
‘আমরা যখন ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি তার এক-দুদিনের মধ্যেই উনি ঢাকা ত্যাগ করে আত্মগোপনে যান। উনাকে খুঁজতে আমাদের দীর্ঘ সময় লেগেছে।’
চট্টগ্রামের বাবর নামের আরও একজন যুবলীগ নেতার নাম সম্রাটের মতোই আসছে উনাকে আপনারা গ্রেফতার করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা অনেক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এর সফলও অনেকদিন মানুষ পাবে। তাই এক-দুজনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে এটা সম্পূর্ণ হবে না। এ কার্যক্রমে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান নিয়ে রাষ্ট্র গড়ে উঠে। আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। আশা করছি, আমরা ভালো কিছু করব।’
সম্রাটের সঙ্গে আরমান নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, উনার পরিচয় জানতে চাইলে বেনজীর আহমেদ বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে উনি যুক্ত।
ক্যাসিনোর টাকা অনেক জায়গায় ভাগ হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আপাতত ক্যাসিনো বন্ধ করেছি। ক্যাসিনোর সঙ্গে যারা সরাসরি যক্তি ছিল, তাদের ধরার চেষ্টা করছি। আমরা আস্তে আস্তে এগোব।’
‘আমরা জানতে পেরেছি যে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগগুলো কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যাসিনোটাও তো একটা অভিযোগ। মোদ্দা কথা হলো- প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, কেঁচো খুঁজতে গিয়ে সাপ বের হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ক্যাসিনো বন্ধ করে দেয়া, সেটা করেছি। এখন লক্ষ্য হচ্ছে কারা ক্যাসিনো অপারেট করেছিল, তাদের আমরা আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা করছি। যাতে করে ভবিষ্যতে এ বেআইনি কাজ কেউ করতে সাহস না পায়।’