চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীর সদর থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে লিখিত আরজি দাখিল করেছেন জোড়াগেট এলাকার মৃত মোঃ আবু তাহের মিঝির ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান মিঝি। আদালত আমলে নিয়ে অভিযোগটি তদন্তের জন্য কেএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ ডিবিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এদিকে এ অভিযোগের বাদী হাবিবুর রহমান মিঝির বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিরা আক্তারসহ আরও একাধিক ব্যক্তি গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে এ অভিযোগ করেন। এ ধরনের লিখিত অভিযোগ এর আগেও তিনবার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে আদালতের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা হাবিবুরের এ সকল অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি।
গত ১০ অক্টোবর ৪র্থ দফায় খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (খালিশপুর) আমলী অঞ্চলে হাবিবুর রহমান লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তার পক্ষে ফাইলিং আইনজীবী ছিলেন শেখ মিজানুর রহমান। আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম অভিযোগটি তদন্তের জন্য কেএমপি’র নগর গোয়েন্দা (ডিবি) শাখাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই অভিযোগে বিবাদীরা হলেন, হাবিবুরের দ্বিতীয় স্ত্রী হিরা আক্তার, হিরা আক্তারের ভাই মোহাম্মদ আলী শেখ, পাবলা এলাকার মোঃ মনিরুল শেখ, কেসিসি’র ৯নং ওয়ার্ডের কাজী মোঃ মোতাসিম বিল্লাহ (আরাফাত), মোছাঃ হাজেরা চৌধুরী, দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকার মোঃ বজলুর রহমান শেখ, গোয়ালখালী এলাকার রেহেনা বেগম, সদর থানার এসআই সাইদুর রহমান, এসআই জুয়েল রানা, এএসআই মোঃ রিপন শেখ, এএসআই মোঃ ইয়ার আলী, কনস্টেবল তানিয়া সুলতানা ও দক্ষিণ টুটপাড়া এলাকার মোসাঃ মাহফুজা বেগম। বাদির লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর অভিযুক্ত বিবাদীরা তার কাছ থেকে জোর পূর্বক নানা ধরনের কাগজে সই স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন।
এ ঘটনা সম্পর্কে এ অভিযোগের ১নং বিবাদী হিরা আক্তার জানান, হাবিবুর রহমানের সাথে ২০১৮ সালে তার বিবাহ হয়। বিয়ের পর হাবিবুর তার কাছ থেকে নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টের সাড়ে ৯ লাখ টাকা ব্যবসার কথা বলে ধার নেন। এছাড়া দু’টি ট্রাক বিক্রি করে ৪০ লাখ টাকা নেন। বিয়ের ১৫/২০ দিন পরে তিনি জানতে পারেন হাবিবুরের প্রথম স্ত্রী রয়েছে। এরপর হাবিবুর তার সাথে আর কোন যোগাযোগ না করে আত্মগোপন করেন। কয়েকদিন পর তিনি জানতে পারেন নগরীর টুটপাড়া এলাকার এক গৃহবধূকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে টাকা-পয়সা স্বর্ণালঙ্কারসহ পালিয়ে যায় হাবিবুর। ঘটনার তিনদিন পর খালিশপুরস্থ শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় হাবিবুর রহমান মিঝিকেও গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বজলুর রহমান শেখ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
তিনি আরও জানান, হাবিবুর রহমান মিঝি নিজেকে অবিবাহিত বলে বিভিন্ন নারীর সাথে প্রতারণা করে টাকা পায়সা হাতিয়ে নিয়ে সর্বশান্ত করে দেন। তার এই অপকর্মের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাদেরকে আদালতে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করেন। এ নিয়ে ৪/৫টি অভিযোগ তিনি আদালতে দিলেও তা তদন্তে মিথা বলে প্রমানিত হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগের বাদী হাবিবুর রহমান মিঝি বলেন, আমার বিরুদ্ধে হিরা আক্তার ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেক ডিজঅনার মামলা করেছেন। আমিও তার বিরুদ্ধে খুলনার আদালতে গত বছর মামলা করেছি। হিরা আক্তার তার স্ত্রী নয় এবং আদালতে তার দেয়া অভিযোগ সত্য বলে দাবি করেন তিনি।