চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার বিষয়টি প্রমাণ হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউ’র পরিচালক বলেছেন বেগম জিয়ার প্রস্তুতি নিতে নিতে দুপুর ২টা-আড়াইটা বেজে যায়। অনেক সময় চারটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসকদের। পরিচালকের বক্তব্য সত্যের অপলাপ। বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এটি শুধু ডাহা মিথ্যাচারই নয়, তার অসুস্থতা নিয়ে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সরকারের পঙ্কিল রাজনৈতিক আবর্তের মধ্যে ঢুকে পড়বেন এটি কেউ প্রত্যাশা করেনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহ ও প্রণোদনায় বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক সাবেক খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য রেখেছেন। নীতি-নৈতিকতা, আদর্শের ওপরে কেউ কেউ নিজের ব্যক্তিস্বার্থকে গুরুত্ব দেন। সেনাবাহিনীর একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং চিকিৎসক হিসেবে এই দুটি উচ্চমানের পেশাককে তিনি অবজ্ঞা করেছেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বেগম খালেদা জিয়া প্রতিদিন সকালের দিকেই রেডি হয়ে যান ইনস্যুলিন নিতে, চিকিৎসা নিতে। তিনি চিকিৎসকদের অপেক্ষায় বসে থাকেন কিন্তু চিকিৎসকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টার আগে তার কেবিনে আসেন না। আমি পরিচালক সাহেবকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বিকেল চারটা পর্যন্ত কবে কোন কোন ডাক্তার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করেন, তাদের নাম জনগণকে বলুন। তিনি দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে সরকারের বক্তব্য তোতা পাখির মতো বলছেন। তারা বলছেন খালেদার সুগার নিয়ন্ত্রণে। আসলে সকালের ফাস্টিংয়ে সুগার ১১ থেকে ১৪ এর মধ্যে থাকে। তাহলে পরিচালক সাহেব এটিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ বলছেন।
রিজভী বলেন, গতকালও খালেদা জিয়ার সুগার ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশনেত্রীর বাই ল্যাটারাল ফ্রোজেন সোল্ডার অর্থাৎ দুটি হাতের সোল্ডার জয়েন্টই ফ্রোজেন হয়ে গেছে। তার রিস্ট জয়েন্ট এবং হাতের স্মল জয়েন্টগুলো বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তিনি হাইলি এক্টিভ ডিফরমিং, রিমেটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি জেলখানায় সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় এবং স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় এসব রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, এক দুর্বিষহ অসুস্থার মধ্যে খালেদা জিয়া দিনযাপন করছেন। তার কোনো চিকিৎসায় হচ্ছে না। পরিচালক প্রেস কনফারেন্স করে প্রমাণ করলেন যে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। পরিচালকের বক্তব্যে মনে হয়েছে পিজিতে বেগম জিয়ার সঠিক চিকিৎসা হবে না। তার জীবন নিয়ে যে ছিনিমিনি চলছে সেটি পরিচালকের বক্তব্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকির মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরির কারাদণ্ড হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিচারকের এই রায় পূর্বপরিকল্পিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিচারক সাজা দেয়ার জন্য অধিক উৎসাহিত হয়ে দ্রুত বিচারকার্য শেষ করেছেন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে সাজা দেয়া হয়েছে।
সরকারের সিন্ডিকেটের কারণেই পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, অবিলম্বে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে হবে।