চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃশিল্পকারখানার নিজস্ব ব্যবস্থায় বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্যাপটিভ) তৈরি করতে বিদ্যুৎ বিভাগের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) সংগ্রহ করতে হবে শিল্প গ্রাহকদের। সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগের জারি করা এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার যেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না, সেখানে ক্যাপটিভ ছাড়া বিকল্প চিন্তা করতে পারছেন না তারা। এতে ভোগান্তি বাড়াবে।
বর্তমানে দেশে ক্যাপটিভ বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা তিন হাজার মেগাওয়াট। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনে পেট্রোবাংলা জ্বালানি সরবরাহ করে। এ বিদ্যুৎ দিয়েই বেশিরভাগ শিল্প কারখানা এখন চালানো হয়। অন্যদিকে দেশে গ্রিড সংযুক্ত আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে রয়েছে। সরকার এই বিদ্যুৎ শিল্পমালিকদের কাছে বিক্রি করা উদ্যোগ নিয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকায় সরকার চাইছে গ্রিডের বিদ্যুতে শিল্প চলুক। তাই এক্ষেত্রে কিছুটা কঠোরতা সৃষ্টি করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এতে সার্বিক চিত্র ভালো হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। যেখানে গ্রিডের বিদ্যুতের প্রাপ্যতা সহজ হবে, সেখানে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (ইপিআরসি)-এর চেয়ারম্যানকে প্রধান করে শিল্প গ্রাহকদের গ্যাস সমস্যা সমাধানে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির শিল্প গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে সুপারিশ দেওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে, সম্প্রতি শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ক্যাপটিভ পাওয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে গ্যাস সরবরাহের জন্য আবেদনের আগে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি হতে এনওসি নেওয়ার জন্য গত ১৯ আগস্ট আদেশ জারি করা হয়। তবে রফতানি, কর্মসংস্থান ও জাতীয় আয়ে ভূমিকার কারণে টেক্সটাইল ও গামেন্টস এই আদেশের বাইরে থাকবে।
এ বিষয়ে ইপিআরসির চেয়ারম্যান সুবীর কিশোর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ক্যাপটিভের ক্ষেত্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি। আমরা ইতিবাচকভাবে বিষয়টি দেখার জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন চাহিদা আছে, তার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বেশি। যেখানে যে শিল্প স্থাপন করুক আমরা বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম।অন্যদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আগে বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি করতে হবে।শিল্প মালিকরা চায় নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ। নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ না দিয়ে যদি শিল্প মালিকদের ক্যাপটিভের ক্ষেত্রের নতুন করে কোনও শর্ত দেওয়া ঠিক হবে না।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু শিল্পমালিকরা নিজস্ব ক্যাপটিভ দিয়ে নিজেরে প্রয়োজন মেটাচ্ছে। এরফলে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে না। মাসের পর মাস বসে থাকছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফলে বসে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় সচল করে শিল্পে বিদ্যুৎ দিতে চায় সরকার।