চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃরাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশ এবং নেপালের মধ্যকার সম্পর্কের প্রতি গুরুত্বারোপের পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বলিষ্ঠ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ পর্যটন ও দুই দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
নেপালের হোটেল ইয়াক এন্ড ইতি-তে বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে রাষ্ট্রপতির সম্মানে দেওয়া নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবি ভাণ্ডারির ভোজসভায় ভাষণ দানকালে আবদুল হামিদ এই পরামর্শ ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ টেকসই সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, পর্যটন এবং উভয় দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর মতো যে সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলোতে আমাদের দুই দেশেরই অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, এই সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভাষার বন্ধন রয়েছে। এ সময় কাঠমান্ডুতে রাষ্ট্রপতি ও তার সফরসঙ্গীদের সম্মান ও উষ্ণ সংবর্ধনার জন্য তিনি নেপাল সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নেপালের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনগণের পক্ষ থেকে দেওয়া নৈতিক ও বস্তুগত সহায়তার বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ সর্বদা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। কাজেই, বাংলাদেশ নেপালের উন্নয়ন প্রকল্প বিশেষ করে ‘সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল’ ভিশন পূরণে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশকে আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে এই দেশকে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরের পাশাপাশি ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায়। এতে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
নেপালে সফররত প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্র ও আঞ্চলিক ফোরামে আমাদের ঐতিহ্যগত ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো পাশাপাশি অভিন্ন প্রত্যাশা পূরণে এক সঙ্গে কাজ করব। এ সময় ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করছি, বন্ধুত্বপূর্ণ নেপালের জনগণ আমাদের এই আনন্দ ও সুখের মুহূর্তগুলো ভাগাভাগি করবে।
এর আগে, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবি ভাণ্ডারি তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি উভয় দেশকে তাদের অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সুস্বাস্থ্যসহ নেপাল ও বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত সুখ এবং সমৃদ্ধি কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের স্ত্রী রাশিদা খানম, নেপালি ভাইস প্রেসিডেন্ট নন্দ বাহাদুর পুন, প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, সংসদ সদস্য ও নেপালের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিগণ ছাড়াও বাংলাদেশের পক্ষে হুইপ আতিউর রহমান আতিক, রেজওয়ান আহমাদ তৌফিক এমপি, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, প্রেসিডেন্টের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল শামীম-উজ-জামান এবং প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।