চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। আমরা ১০০ বছর মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করেছি। শুধু আজকের জন্যই নয়, আমরা ১০০ বছর পরের স্বপ্ন দেখছি।’
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এ অসাধারণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করছে। বিশ্ববিখ্যাত দেশসমূহের নেতৃবৃন্দ এখন বলেন, কিছু শিখতে চাইলে, দেশকে উন্নত করতে চাইলে বাংলাদেশে যেতে হবে এবং শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের (সিআরবিসি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তুরাগ নদের বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ এবং কমপ্যাক্ট টাউনশিপ উন্নয়ন প্রকল্প ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত ওয়াটারফ্রন্ট স্মার্ট সিটি প্রকল্পের বিষয়ে রাজউকের সঙ্গে সিআরবিসির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
রাজউকের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ এবং সিআরবিসির পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী সুন ইয়োগুও।
এ সমঝোতার আওতায় সিআরবিসি নিজস্ব অর্থায়নে এক বছরের মধ্যে উল্লিখিত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরিবেশগত সমীক্ষা করবে। সিআরবিসি সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরিবেশগত সমীক্ষা কাজ শেষে উল্লিখিত প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। আমরা সব সময় চীনা কোম্পানি ও চীন সরকারকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে স্বাগত জানাই। ইতোমধ্যে চীনা কোম্পানি ও চীন সরকার অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে। চট্টগ্রামে চীনা কোম্পানি টানেল নির্মাণ করছে। সিআরবিসি আলোচ্য প্রকল্প ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের জন্য, এমনকি যাদের জমি নেই, তাদের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার তৃণমূল গ্রামীণ জনপদ থেকে রাজধানী পর্যন্ত সকলের আবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এভাবে আমরা জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছি। এ উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী ও আদর্শ নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার। তিনি বলেন, ‘বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ একটি শহরের অস্তিত্ব রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। রাজউক তুরাগ নদের তীরে কমপ্যাক্ট টাউনশিপ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ ভূমি জলাশয় সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে সংরক্ষণ করা হবে। কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত স্মার্ট সিটিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্টের সংস্থান থাকবে। এখানে পর্যাপ্ত জলাশয় সংরক্ষণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এসডিজি ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ করছি। আশা করি, আলোচ্য প্রকল্প দুটি এসডিজি ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ঢাকাকে বিশ্বমানের শহর হিসেবে গড়ে তুলবে।’
স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আজহারুল ইসলাম খান। সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন রাজউকের চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ।
রাজউকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘তুরাগ টাউনশিপ প্রকল্পে প্রায় ৭০ শতাংশ ভূমি জলাশয় ও ইকোসিস্টেমের জন্য সংরক্ষণ করা হবে এবং মাত্র ৩০ শতাংশ ভূমি টাউনশিপের জন্য ব্যবহার করা হবে। ড্যাপ বাস্তবায়নের সাথে সংগতি রেখে এ প্রকল্প করা হবে। প্রকল্পে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে তাদের কেউ প্লট বা ফ্ল্যাট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন না। এ প্রকল্পে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন দিয়েছেন। তুরাগ টাউনশিপ প্রকল্প বাস্তবায়ন এ মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশ। এ মাস্টারপ্ল্যান এসডিজি-৬ অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তুরাগ টাউনশিপ প্রকল্প রাজউকের ইতিহাসে একটি মাইলস্টোন হিসেবে থাকবে।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সুন ইয়োগুও। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।