চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ফজলে শামস পরশ। একইসঙ্গে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাইনুল হোসেন খান নিখিল। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসের (সম্মেলন) কাউন্সিল অধিবেশনে তাদের নির্বাচিত করা হয়।দলের কাউন্সিল অধিবেশনে চেয়ারম্যান পদে শেখ ফজলে শামস পরশের নাম প্রস্তাব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম। সমর্থন করেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক।
রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও পরশ যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি শিক্ষকতায় ব্যস্ত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একই বিষয়ে আবারও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরশের বর্তমান বয়স ৫১ বছর।পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার কালরাতে শেখ ফজলে শামস পরশের বাবা-মাও শহীদ হন। ওই সময় তিনি ও তার ছোট ভাই ঢাকা-১২ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। ওই সময় পরশের বয়স ছিল ছয় বছর এবং তাপসের বয়স ছিল চার বছর।
এদিকে মাইনুল হোসেন খান নিখিল ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি এবার কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা নির্বাচিত হলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে সাতজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে সাধারণ সম্পাদকের নাম চূড়ান্ত করার জন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। তবে সমঝোতা না হওয়ায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার মতামত অনুসারে নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।
ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী মাইনুল হোসেন খান নিখিল দুই যুগের বেশি সময় ধরে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে তিনি উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেন।সাধারণ সম্পাদক পদে অন্য যাদের নাম আসে তারা হলেন−মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন, সুব্রত পাল, মনজুর আলম শাহিন, ইকবাল মাহমুদ বাবলু ও বদিউল আলম।
আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস (সম্মেলন) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১১টায় এ কংগ্রেস উদ্বোধন করেন তিনি। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের শুরু হয়। পরে পায়রা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনাকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে এবং উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন যুবলীগ নেতারা। সম্মেলনের দ্বিতীয় সেশনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে।
এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের সম্মেলন। ক্যাসিনো, মাদক, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারেও রয়েছেন। সংগঠনটির চেয়ারম্যানকেও এসব অনৈতিক কাজে সমর্থনের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সংগঠনে থাকলেও নিষ্ক্রিয় থাকতে বাধ্য হয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও শেখ আতিয়ার রহমান দিপুসহ অনেকে। তারা কেউই এবার সম্মেলনে থাকতে পারছেন না।