চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃচট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় মেহেরসাগর কলার চাষ করে সফল হয়েছেন আমানে আলম। উপজেলা সদরের দরবেশহাটস্থ হাজী পাড়ার মৃত হাজী ঠান্ডা মিয়ার ছেলে আমানে আলম বাড়ির পাশে বছরখানেক আগে নিজ জমিতে কলার চাষ করেন। প্রথম দফায় প্রচুর কলা ও কলার চারা বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের শেষের দিকে তিনি প্রায় তিন একর জমিতে মেহেরসাগর কলার চাষ শুরু করেন। জমিতে তিন হাজার কলার চারা রোপন করেন। শুরুতেই চারা ক্রয়, জমি তৈরি ও কলার বাগান পরিচর্যা করতে তার খরচ হয় প্রায় তিন লাখ টাকা। পরিচর্যা করায় প্রতিটি গাছে আশানুরূপ কলা ধরে। আর প্রথমবারেই প্রায় ১৬ লাখ টাকার কলা এবং এক লাখ টাকার চারা বিক্রি করেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমানে আলমের নিজ জমিতে বিশাল মেহেরসাগর কলার বাগান। বাগানে রয়েছে সারি সারি কলা গাছ। প্রতিটি গাছেই ঝুলছে কলার ছড়ি। প্রতিটি ছড়িতে প্রায় ১৫০ থেকে ২২০ টির মতো কলা রয়েছে। কলার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। অন্যদিকে, সবকয়টি কলা গাছের গোড়ায় জন্মেছে নতুন চারা গাছ। মাস দু’য়েকের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় কলা বিক্রি শুরু হবে।
কলা চাষি আমানে আলম জানান, স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে মেহেরসাগর কলার চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথম বছর কলা ও চারা বিক্রি করে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। দ্বিতীয় বারও প্রচুর কলা ও কলার চারা বিক্রি করতে পারবেন তিনি। কলার প্রতিটি ছড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং প্রতিটি চারা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি করেন। প্রথমবারে উৎপাদন ও পরিচর্যা জন্য কিছু টাকা খরচ হলেও দ্বিতীয়বার তেমন খরচ হয়নি। কলা গাছের গোড়ায় জন্ম নেওয়া চারা থেকেও প্রতিবারেই ফলন পাওয়া যায়। তিনি দাবি করেন, তার বাগানে উৎপাদিত কলা বিষমুক্ত। কলা গাছে তিনি কোনো কীটনাশক প্রয়োগ করেন না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান জানান, আমানে আলমের বাগানে উৎপাদিত মেহেরসাগর কলা মোটা, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। তার কলা বাগান দেশের বেকার যুবকদের জন্য একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। কলা চাষ করে তিনি লাভবান হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বেকার যুবকদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, কলা পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। কলা চাষ খুবই লাভজনক। সারা বছরই কলার চাহিদা থাকে। কলা চাষে শ্রম ও ব্যয় কম হয়। দুই থেকে তিন বছর কলার ভালো ফলন হয়। এক একর জমিতে প্রায় দুই লাখ টাকার কলা উৎপাদন হয়। কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি প্রয়োগ করলে কীটনাশকের ব্যবহার ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। আমানে আলমের কলা বাগান উপজেলার সর্ববৃহৎ ও লাভজনক কলা বাগান। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমানে আলম কলার চাষ করে লাভবান হয়েছেন।