চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সিরাজ বলেন, ঢাকায় রিকশা তুলে দেয়ার মতো অবস্থা নেই। তবে বৈধ রিকশা রেখে অবৈধ রিকশা উচ্ছেদ করতে হবে। যে ভিআইপি সড়কে রিকশা চলে না সেখানেও যানজট আছে। সুতরাং রিকশা যে যানজটের প্রধান কারণ সেটা সঠিক নয়।মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বিলস’ আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহন ও রিকশা : বাস্তবতা, সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো রেজাউল করিম বলেছেন, ঢাকার শহরের একটি বড় অংশ গণপরিবহনের আওতায় আনা সম্ভব নয়। এটা পরিকল্পনাবিদরা ভালো বলতে পারবেন। তবে সমস্যা চিহ্নিত করে এর প্রতিকার কী তা কার্যকর করতে হবে।রিকশা বন্ধের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, ঢাকায় রিকশা বন্ধের আগে কেন বন্ধ করা প্রয়োজন সে যুক্তি দাঁড় করাতে হবে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না। যেখানে গাড়ি স্পিডে চলে সেখানে রিকশা বন্ধ করতে হবে। যদি চলেও তাহলে রিকশার জন্য আলাদা লেন থাকতে হবে। কার এবং রিকশা পার্কিংয়ের জন্য আইন করতে হবে। তাহলে যানজট অনেকাংশে কমবে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেল চালু হলে যানজট কমবে। তবে মেট্রোরেলের প্রতি স্টেশনে একটি করে রিকশা স্ট্যান্ড করতে হবে। তা না হলে মেট্রোরেল থেকে কমিউনিটিতে যোগাযোগ হবে না।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরও বলেন, এতে রিকশা চালকদের স্মার্টকার্ড থাকবে। সেখানে তার সব তথ্য থাকবে। পাশাপাশি তাদের জন্য ট্রাফিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাচ করে তারা প্রশিক্ষণ নেবেন। এতে সড়কে কীভাবে চলতে হবে তা তারা শিখবেন।
বিলসের গবেষণার বরাতে তিনি বলেন, ঢাকায় ১০ লাখ রিকশা রয়েছে। এগুলো দুই শিফটে ২০ লাখ মানুষ চালায়। ২০ লাখ মানুষের উপর আরও ৬০ লাখ মানুষ নির্ভরশীল। অর্থাৎ ঢাকায় রিকশার উপর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ নির্ভর করে। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ ৪০ লাখ থাকেন গ্রামে। তাদের ভরণ-পোষণের টাকা ঢাকা থেকে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, বলা হয় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে রিকশা নেই। কিন্তু এটা কেউ বলে না যে সেখানে সাইকেলভিত্তিক শহর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকায় আমরা রিকশা ভিত্তিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।
সড়কে রিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে আইনের ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের শাহবাগ জোনের পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা বলেন, মোটর ভ্যাহিক্যাল আইনে রিকশা বা চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিধান নেই। রিকশার রেজিস্ট্রেশন দেয় সিটি করপোরেশন। এছাড়া চালকরা ট্রাফিক আইন সম্পর্কেও জানেন না। এজন্য এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
তিনি বলেন, হিসেব করলে দেখা যায় বিমান থেকে রিকশা ভাড়া বেশি। এরপরও মানুষ অযান্ত্রিক এ বাহন ব্যবহার করেন। কিন্তু কষ্ট লাগে যখন আমার বাবার বয়সী কেউ আমাকে টেনে নিয়ে যায়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিলসের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রোগ্রাম কনসালট্যান্ট খন্দকার আবদুস সালাম প্রমুখ।