চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনার সেফ ইসলামী গ্রুপ লিমিটিড, সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটিড ও অঙ্গ সহযোগি প্রতিষ্ঠানের এবং এসকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নামে বিপুল পরিমানে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, এমডিসহ কর্মকর্তারা গ্রাহক ও শেয়ার হোল্ডারদের টাকা আত্মসাৎ করে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। আত্মগোপনে কর্মকর্তারা এ সকল সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্তরা হলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোঃ মোক্তার হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্ল¬াহ আল মামুন, পরিচালক ইসমাইল হোসেন, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ ও এস এম রাজুল হাসান রাজু, সেফ ইসলামী ব্যাবাসীয় কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি মোঃ মোখতার হুসাইন, সম্পাদক আব্দুল¬াহ আল মামুন, সহ-সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন, সদস্য আব্দুর রশিদ, সদস্য এস এম এইচ ওসমান করিম ও সদস্য জিএম গোলাম মোস্তফা। এছাড়াও ৯টি ব্যাংকের শাখা, ৪টি সাব রেজিস্ট্রি অফিস, খুলনা বিভাগীয় জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার, খুলনা জেলা সমবায় অফিসার, মেট্রোপলিটন থানা সমবায় অফিসার, বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক এবং বিআরটিএ ঢাকা ও খুলনা কার্যালয় মামলায় বিবাদীর তালিকায় রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সেফ ইসলামী গ্র“প লিমিটিড, সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটিড, অঙ্গ সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিডস ডিস্ট্রিবিউশন ও সেফ মিনারেল ওয়াটার নামের প্রকল্পের নামে সম্পত্তি ক্রয় করা হয়েছে। এর মধ্যে পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীরামপুর মৌজায় ০.১০ একর দলিল নং- ২৯৮০/১৫ এবং বটিয়াঘাটা উপজেলা ও লবণচরা থানা এলাকার সিএস ৩৩৪ খতিয়ানে আরএস ৮৫৩২ নং দাগে ২.১৬৫০ একরের মধ্যে ০.৫৪ একর দলিল নং-৪৬২০/১৫। অপর দিকে সেফ ইসলামী গ্র“প লিমিটিডের চেয়ারম্যান, এমডি, পরিচালক এবং সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটিডের সভাপতি ও সম্পাদকের নামে ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা ও খুলনা সদরে সম্পত্তি ক্রয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ডুমুরিয়ার চক হাসানখালী মৌজায় ২.৮৫ একর দলিল নং-৩৭২০/১৪, একই মৌজায় জেএল নং-৫৮, আরএস ৬৪নং দাগে ০.৫২৭৫৬ একর দলিল নং-৯৮৩/১৪, বটিয়াঘাটার রাজবাঁধ মৌজায় ০.২৮ একর দলিল নং-৭২৭৮/১১, লবণচরা থানাধীন খানজাহান আলী সেতু সংযোগ সড়কের দক্ষিণ রাস্তায় ২.১৬৫০ একর জমি ৫৫০৫ নং-দলিলে ক্রয় করা হয়েছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিডস ডিস্ট্রিবিউশনের নামে সানফ্লাওয়ার ভোজ্য তেল রক্ষিত গুদাম ও মোস্তফার মোড় এলাকায় সেফ মিনারেল ওয়াটার নামের প্রতিষ্ঠানের সকল ধরনের মালামাল ও সম্পত্তি ছাড়াও ঢাকা মেট্রো গ ৪২৪৯২২ এবং খুলনা মেট্রো ন ১১-০৭৭১ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের দু’টি গাড়ি রয়েছে এ তালিকায়। এ সকল সম্পদ প্রতিষ্ঠানের সকল গ্রাহক ও শেয়ার হোল্ডারদের রক্ষিত টাকা দিয়ে ক্রয় ও প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ কারনে প্রতিষ্ঠানটির অর্থসম্পদ অন্যত্র হস্তান্তরের ওপরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করেছেন গ্রাহকরা। আদালতের লিখিত আরজিতে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এবং সংশ্লি¬ষ্ট সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। ১২২ জন গ্রাহকের একশ’ কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন বলেও আরজিতে উল্লে¬খ করা হয়। গত ২৮ নভেম্বর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলাটি করা হয় (নং-দেওয়ানী ৪৩১/১৯)।
জানা গেছে, সেফ ইসলামী গ্র“প লিমিটেডের অঙ্গ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে সাধারণ মানুষের কাছে বিভিন্ন মূল্য মানের শেয়ার বিক্রি এবং এককালীন সঞ্চয়ী আমানত গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা গত কয়েক মাস পূর্বে শত শত কোটি টাকা আত্মসাত করে আত্মগোপন করেছেন। এ কারনে প্রতিষ্ঠানটির সকল কর্মকর্তা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে সকল ধরনের ব্যাংক একাউন্ট, জমি-জমাসহ সকল প্রকার সম্পত্তির অন্যত্র হস্তান্তরের ওপরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ১২২ জন গ্রাহক এ আবেদন করেছেন।