চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবেনাপোল বন্দরে রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ একশ্রেণির পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের চোখের সামনে এই টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়ে যাচ্ছে। চক্রটি বেনাপোল বাইপাস সড়ক থেকে রফতানি গেট পর্যন্ত কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে সিরিয়ালের নামে এ ফায়দা লুটে নিচ্ছে।বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ২০০ থেকে ২৫০টি পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। একইভাবে ভারত থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৪৫০টি পণ্যবোঝাই ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সঙ্গে টাকা নিয়ে দরকষাকষি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ট্রাকপ্রতি সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা থাকে শ্রমিক নামধারী চক্রটি। টাকা না দিলে দিনের পর দিন পণ্য নিয়ে রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিচে থাকতে হয় ট্রাককে। এমনভাবে জট লাগিয়ে রাখা হয়, যার কারণে শ্রমিক নেতাদের শরণাপন্ন না হয়ে উপায় থাকে না ট্রাক চালকদের। অনেকটা বাধ্য হয়েই চক্রটির হাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গুঁজে দিয়ে পণ্য রফতানি করতে হয়। সম্প্রতি সকালের দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর চক্রটি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ট্রাকচালক বলেন, বেনাপোলের বড়আচড়া গ্রামের আবু সাঈদের নেতৃত্বে তবিবর, তরিকুল শুকুর আলী ও নজরুল ইসলাম নজুসহ একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে। এটি এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করছে বেনাপোল, শার্শা ও বাগআচড়া নিয়ে গঠিত কথিত ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ঘেনা মোড়ল ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন। বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মচারী মফিজুর রহমান জানান, বন্দরের ট্রাক শ্রমিকদের কাছে রফতানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা জিম্মি। তাদের টাকা না দিলে দিনের দিন রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করানো যাবে না। নির্ধারিত সময়ে ট্রাক ভারতে ঢুকাতে না পারলে যেমন ক্ষতিপূরণ দিতে হয়, পড়তে হয় শিপমেন্টের ঝামেলায়ও। সঠিক সময়ে পণ্য না পৌঁছালে আমদানিকারকরা পণ্য নিতে চায় না। ফলে বাধ্য হয়েই স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের ট্রাকপ্রতি ৫০০-২০০০ টাকা দিতে হয়। এ ব্যাপারে বেনাপোল, শার্শা ও বাগআচড়া এলাকা নিয়ে গঠিত ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ঘেনা মোড়ল জানান, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করে থাকি। তার বাইরে কোনো টাকা আদায় করা হয় না।
বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান জানান, বন্দর এলাকায় যে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।