চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবিভিন্ন দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে শ্রমিক ধর্মঘটে ২৪ ঘন্টা উৎপাদন বন্ধ ছিল। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে আজ বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট পালন করে শ্রমিকরা। মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ এই ধর্মঘট ডাকে। কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষোভ করেন পাটকল শ্রমিকরা। একই দাবিতে আগামী ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ নিজ মিল গেটে আমরণ গণঅনশনের কর্মসূচি রয়েছে। এদিকে শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি ও বেতন বাবদ পাওনা রয়েছে ৬২ কোটি টাকা।
ধর্মঘটের কারণে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ণ, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে গতকাল মঙ্গলবার উৎপাদন বন্ধ ছিল। মিল চালু থাকলে প্রতিদিন গড়ে ৭৭ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। সকাল ৯টার দিকে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকরা পৃথকভাবে নগরীর খালিশপুর এলাকার বিআইডিসি সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এছাড়া বিকেলে প্রতিটি পাটকলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্লাটিনাম জুট মিলের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর, মনিরুল ইসলাম শিকদার প্রমুখ। ক্রিসেন্ট, খালিশপুরসহ অন্যান্য পাটকলেও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাটকলগুলোর সূত্রে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মজুরি ও বেতন পাওনার পরিমাণ ৬২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মজুরি বাবদ বকেয়া ৪৮ কোটি ১৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ১৪ কোটি ২৫ াখ ৭১ হাজার টাকা।
শ্রমিক নেতারা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিকের ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং ১ হাজার ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের চিকিৎসা বন্ধের উপক্রম। দোকানিরা এখন আর তাদেরকে বাকিতে কোনো মাল জিনিস দিতে চায় না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর তারা আমরণ অনশন শুরু করবেন।
এদিকে প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএ কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনশন কর্মসূচি সফল করতে আগামী ৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় গেট সভা করা হবে বলে জানানো হয়।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী মোঃ বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, দেশের পাটকলগুলোর শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ১০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে। বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে ওই টাকা শিগগিরই পাটকলগুলোতে আসবে। তখন শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি প্রদান করা হবে। তবে মজুরি কমিশন কবে থেকে কার্যকর হবে তা তিনি বলতে পারেন না।