চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃদেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাথে নিয়ে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করতে চায় বিএনপি। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের সহধর্মিণী হিসেবে এটি তার অধিকার। নিষ্ঠুরতা ও প্রতিহিংসার শিকার হয়ে প্রায় দু’বছর যাবত কারাবন্দি বেগম জিয়ার জামিন লাভের অধিকার মৌলিক মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার। তিনি ৭৩ বছর বয়সী একজন বয়োবৃদ্ধা নারী, তিনি গুরুতর অসুস্থ এবং তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তার জামিনের ব্যাপারে আগামী ১২ ডিসেম্বর আর কোন টালবাহানা করা হলে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা রাজপথের দখল নিয়ে বিজয় দিবসের পূর্বেই আর একটি বিজয় ছিনিয়ে আনবে। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে প্রতিটি নেতা-কর্মী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত।
গতকাল মঙ্গলবার খুলনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দলের নগর ও জেলা শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। তবে সমাবেশ শেষে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নগরীতে র্যালি করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। কার্যালয়ের সামনে থেকে নেতা-কর্মীরা র্যালি নিয়ে থানার মোড়ে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়।
সমাবেশে বক্তারা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ, মূল্যস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। ভোটের লাইনে ভোটার নাই, ভোটার দাঁড়িয়ে আছে ন্যায্যমূল্যের তেল, ডাল, পেঁয়াজের লাইনে। মেগা প্রজেক্টে সরকারে লুটপাট ও মেগা দুর্নীতি অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোতে টাকা নাই। গণতন্ত্রের সংগ্রামের আপোসহীন নেত্রী, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী কারাগারে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বক্তৃতা করেন জেলা সভাপতি এড. এস এম শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, নগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, জেলার সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, এড. তছলিমা খাতুন ছন্দা, মাহবুব হাসান পিয়ারু, একরামুল হক হেলাল, শরিফুল ইসলাম বাবু ও জাবির আলী। সভা পরিচালনা করেন আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওহেদুজ্জামান রানা। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল মান্নান।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন এড. ফজলে হালিম লিটন, স ম আব্দুর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, শেখ জাহিদুল ইসলাম, শাহজালাল বাবলু, শেখ আব্দুর রশিদ, এড. মোল্লা মাসুম রশিদ, এস এ রহমান বাবুল, সিরাজুল ইসলাম নান্নু, মাহবুব কায়সার, কামরুজ্জামান টুকু, আশরাফুল আলম নান্নু, এড. শহিদুল আলম, আজিজুল হাসান দুলু, এড. গোলাম মাওলা, গিয়াসউদ্দিন বনি, মুর্শিদুর রহমান লিটন, সুলতান মাহমুদ, ইফসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ আহসান পরাগ. মুর্শিদ কামাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শামসুজ্জামান চঞ্চল, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, কামরান হাসান, হেলাল আহমেদ সুমন, এড. তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, নাজিরউদ্দিন আহমেদ নান্নু, নিঘাত সীমা, মাজেদা খাতুন, আনজিরা খাতুন প্রমুখ।
সমাবেশ শুরুর আগেই নগরীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সমাবেশস্থলে হাজির হয়। একের পর এক মিছিল এসে যোগ দেয় কর্মসূচিতে। এছাড়া ছাত্রদল ও যুবদলের একাধিক মিছিল যোগ দেয়। এ সময় শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা। সমাবেশস্থলে প্রবেশের দুই পাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।